ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT) কী? ইন্টারনেট অফ থিংসের ইতিহাস, নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা সংক্রান্ত উদ্বেগ

ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧) হলো একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে রূপান্তরকারী (𝗧𝗿𝗮𝗻𝘀𝗳𝗼𝗿𝗺𝗮𝘁𝗶𝘃𝗲) প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে একটি। ডেটা সংগ্রহ (𝗗𝗮𝘁𝗮 𝗖𝗼𝗹𝗹𝗲𝗰𝘁), ডেটা আদান-প্রদান (𝗗𝗮𝘁𝗮 𝗦𝗵𝗮𝗿𝗲) এবং ডেটা বিশ্লেষণ (𝗗𝗮𝘁𝗮 𝗔𝗻𝗮𝗹𝘆𝘀𝗶𝘀) করার জন্য ইন্টারনেট অফ থিংস, ফিজিক্যাল ডিভাইসগুলোকে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত করে। স্মার্ট (কম্পিউটারের মতো ডিভাইস), হোম অ্যাপ্লায়েন্স এবং পরিধেয় (𝘄𝗲𝗮𝗿𝗮𝗯𝗹𝗲) ডিভাইস থেকে শুরু করে শিল্প যন্ত্রপাতি এবং সংযুক্ত গাড়ি পর্যন্ত, ডিজিটাল বিশ্বের অনেক কিছুর সাথে মানুষের যোগাযোগের পদ্ধতিতে বিপ্লব ঘটাচ্ছে ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧)। এই প্রবন্ধে, আমরা ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧) কী, 𝗜𝗼𝗧 এর ইতিহাস, 𝗜𝗼𝗧 কীভাবে কাজ করে এবং প্রতিটি ব্যবহারকারী এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তার যে বিষয়গুলো জানা উচিত সেগুলো আলোচনা করব।

প্রবন্ধের শেষে যে বিষয়গুলো জানবেন

  • ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧) কী?
  • ইন্টারনেট অফ থিংসের (𝗜𝗼𝗧) ইতিহাস
  • ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧) কীভাবে কাজ করে?
  • ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧) নিরাপত্তা: এটা কতটা নিরাপদ?
  • ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧)-তে গোপনীয়তা সংক্রান্ত উদ্বেগ
  • নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা সম্পর্কিত উদ্বেগ
  • ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧)-এর ভবিষ্যৎ
  • উপসংহার

ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧) কী?

ইন্টারনেট অফ থিংস বলতে ফিজিক্যাল ডিভাইসগুলোর মধ্যে স্থাপিত একধরনের আন্তঃসম্পর্কিত নেটওয়ার্ককে বোঝানো হয়। যেগুলোকে প্রায়শই "স্মার্ট ডিভাইস" (কম্পিউটারের মতো ডিভাইস) বা "সংযুক্ত (কানেক্টেড) ডিভাইস" বলা হয়। এসকল ডিভাইস গুলো সেন্সর, ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক, 𝗔𝗿𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝗰𝗲 (𝗔𝗜), সফ্টওয়্যার এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকে। এই জিনিসগুলোর মধ্যে রয়েছে ফোন, যন্ত্রপাতি, থার্মোস্ট্যাট, আলো ব্যবস্থা (𝗟𝗶𝗴𝗵𝘁𝗶𝗻𝗴 𝗦𝘆𝘀𝘁𝗲𝗺𝘀), সেচ ব্যবস্থা, নিরাপত্তা ক্যামেরা, যানবাহন, এমনকি প্রাণী এবং শহর। আজ, স্মার্ট ঘড়ির মাধ্যমে ব্যায়াম এবং (ব্যায়ামের সময়) স্টেপ/ধাপ গুলো ট্র্যাক করা যায়, স্মার্ট স্পিকারগুলোর মাধ্যমে শপিং তালিকায় বিভিন্ন আইটেম যুক্ত করা এবং লাইট চালু এবং বন্ধ করা যায়। ট্রান্সপন্ডারগুলো গাড়ি/যানবাহন গুলোকে টোলবুথের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করতে এবং ইলেকট্রনিকভাবে ফি প্রদান করতে সাহায্য করে। ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧) অনেক জটিল এবং কখনও কখনও মানুষের ক্ষমতার বাইরের কাজগুলোকে সহজ এবং স্বয়ংক্রিয় করে তোলে। দিনে দিনে ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧) তৈরি হওয়ার ফলে কানেক্টেড/সংযুক্ত ডিভাইসের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ডিভাইসগুলো মানুষের হস্তক্ষেপ (𝗛𝘂𝗺𝗮𝗻 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗿𝘃𝗲𝗻𝘁𝗶𝗼𝗻) ছাড়াই ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডেটা সংগ্রহ এবং বিনিময় করতে পারে। 𝗜𝗼𝗧 ডিভাইসের উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে:
  • নেস্টের (𝗡𝗲𝘀𝘁) মতো স্মার্ট থার্মোস্ট্যাট।
  • ফিটবিটের (𝗙𝗶𝘁𝗯𝗶𝘁) মতো পরিধানযোগ্য ফিটনেস ট্র্যাকার।
  • স্মার্ট রেফ্রিজারেটর।
  • কানেক্টেড সিকিউরিটি ক্যামেরা।
  • উৎপাদনের (𝗠𝗮𝗻𝘂𝗳𝗮𝗰𝘁𝘂𝗿𝗶𝗻𝗴) জন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল 𝗜𝗼𝗧 সেন্সর।
সহজ ভাষায়:
𝗜𝗼𝗧 হল ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ এবং একসাথে কাজ করার মাধ্যমে ফিজিক্যাল বস্তূ (𝗢𝗯𝗷𝗲𝗰𝘁𝘀)গুলোকে স্মার্ট করে তোলা।

ইন্টারনেট অফ থিংসের ইতিহাস

যদিও ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧) তুলনামূলকভাবে আধুনিক ধারণা, কিন্তু এর শিকড় কয়েক দশক ধরে চলে আসছে।

১৯৬০-১৯৮০ (ইন্টারনেট অফ থিংসের প্রাথমিক ধারণা)

𝗔𝗥𝗣𝗔𝗡𝗘𝗧 (প্রাথমিক ইন্টারনেট/ইন্টারনেটের উত্তরসুরী) তৈরির সময় সংযুক্ত ডিভাইসের (𝗖𝗼𝗻𝗻𝗲𝗰𝘁𝗲𝗱 𝗗𝗲𝘃𝗶𝗰𝗲𝘀) ধারণাটি উদ্ভূত হয়েছিল। ৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে, কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীরা ইনভেন্টরি এবং তাপমাত্রা ট্র্যাক করার জন্য একটি কোকা-কোলা ভেন্ডিং মেশিন ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত করেছিলেন।

১৯৯০ (ইন্টারনেট অফ থিংসের জন্ম)

১৯৯০ সালে, জন রমকি (𝗝𝗼𝗵𝗻 𝗥𝗼𝗺𝗸𝗲𝘆) প্রথম ইন্টারনেট-সংযুক্ত টোস্টার তৈরি করেছিলেন। ১৯৯৯ সালে কেভিন অ্যাশটন (𝗞𝗲𝘃𝗶𝗻 𝗔𝘀𝗵𝘁𝗼𝗻) প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বলে (𝗣𝗿𝗼𝗰𝘁𝗲𝗿 & 𝗚𝗮𝗺𝗯𝗹𝗲) কাজ করার সময় "ইন্টারনেট অফ থিংস" শব্দটি তৈরি করেছিলেন। তিনি এমন একটি সিস্টেমের কল্পনা করেছিলেন যেখানে ডিভাইসগুলো 𝗥𝗙𝗜𝗗 (𝗥𝗮𝗱𝗶𝗼 𝗙𝗿𝗲𝗾𝘂𝗲𝗻𝗰𝘆 𝗜𝗱𝗲𝗻𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗮𝘁𝗶𝗼𝗻) রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে নিজেদের পরিচালনা করতে পারে।

২০০০ (বাণিজ্যিক সম্প্রসারণ)

ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ এবং মোবাইল ইন্টারনেটের প্রবর্তন 𝗜𝗼𝗧-এর গ্রহণযোগ্যতাকে আরো বাড়িয়ে তোলে। ২০০৮ সালে, কানেক্টেড ডিভাইসের সংখ্যা পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে যায়।

২০১০–বর্তমান (সর্বত্র ইন্টারনেট অফ থিংস 𝗜𝗼𝗧)

স্মার্ট হোমস, পরিধেয় প্রযুক্তি (𝗪𝗲𝗮𝗿𝗮𝗯𝗹𝗲 𝗧𝗲𝗰𝗵), কানেক্টেড গাড়ি এবং শিল্পায়নে ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧) মূলধারায় পরিণত হয়েছে। আজ, বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি 𝗜𝗼𝗧 ডিভাইস কাজ করে, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবীতে কানেক্টেড ডিভাইসের সংখ্যা ৩০ বিলিয়নেরও বেশি হওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে।

ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧) কীভাবে কাজ করে?

𝗜𝗼𝗧-এর ভিত্তি হলো ইন্টারনেট প্রোটোকল (𝗜𝗣) এবং ট্রান্সমিশন কন্ট্রোল প্রোটোকল (𝗧𝗖𝗣)। এই মান এবং নিয়মগুলো সেন্সর, ডিভাইস এবং সিস্টেমগুলোকে ইন্টারনেট এবং একে অপরের সাথে সংযোগ স্থাপনের ভিত্তি তৈরি করে। 𝗜𝗼𝗧 ডিভাইসগুলো থেকে ডেটা প্রক্রিয়া/প্রসেস করে এবং ইথারনেট, ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, 𝟱𝗚 এবং 𝗟𝗧𝗘 সেলুলার, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন (𝗥𝗙𝗜𝗗) এবং নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন (𝗡𝗙𝗖) সহ তারযুক্ত এবং ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তথ্য যোগাযোগ করে। সাধারণত, 𝗜𝗼𝗧 ডিভাইসগুলো 𝗜𝗼𝗧 গেটওয়ে বা এজ (𝗘𝗱𝗴𝗲) ডিভাইসের সাথে সংযুক্ত হয় যা ডেটা সংগ্রহ করে। তারা ক্লাউড কম্পিউটিং পরিবেশে এবং সেখান থেকে ডেটা ফিড করে, যা তথ্য সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়াজাত করে। নেটওয়ার্কিং স্ট্যান্ডার্ডের একটি বিস্তৃত অ্যারে (𝗮𝗿𝗿𝗮𝘆) নিশ্চিত করে যে ডেটা তখন ভাগ করা যায় এবং সঠিক "জিনিস (𝘁𝗵𝗶𝗻𝗴)"-এ পৌঁছায়, যার ফলে ফিজিক্যাল জগতকে ডিজিটালের সাথে সংযুক্ত করা হয়।ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧)-এর কার্যকারিতা চারটি প্রধান উপাদানে বিভক্ত করা যেতে পারে:
🔷 ১. ডিভাইস এবং সেন্সর
এগুলো হলো ফিজিক্যাল ডিভাইস যেগুলো তথ্য সংগ্রহ করার জন্য সেন্সর এবং চিপ এর সাথে সংযুক্ত থাকে।উদাহরণ: একটি স্মার্ট থার্মোস্ট্যাট ঘরের তাপমাত্রা পরিমাপ করে।
🔷 ২. সংযোগ (𝗖𝗼𝗻𝗻𝗲𝗰𝘁𝗶𝘃𝗶𝘁𝘆)
ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧) প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডেটা ক্লাউড বা অন্যান্য ডিভাইসে প্রেরণ করা হয়। যেমন-
  • ওয়াই-ফাই
  • ব্লুটুথ
  • জিগবি
  • সেলুলার নেটওয়ার্ক (৪জি, ৫জি ৬জি)
  • স্যাটেলাইট
🔷 ৩. ডেটা প্রক্রিয়াকরণ (𝗗𝗮𝘁𝗮 𝗣𝗿𝗼𝗰𝗲𝘀𝘀𝗶𝗻𝗴)
ডেটা যখন একবার ক্লাউডে পৌঁছায়, সফ্টওয়্যার তখন সিদ্ধান্ত নিতে বা পদক্ষেপ নিতে এটিকে প্রক্রিয়া (𝗣𝗿𝗼𝗰𝗲𝘀𝘀𝗶𝗻𝗴) করে।
উদাহরণ: যদি ঘরের তাপমাত্রা খুব কম থাকে, তাহলে থার্মোস্ট্যাট হিটার চালু করে।
🔷 ৪. ব্যবহারকারী ইন্টারফেস (𝗨𝘀𝗲𝗿 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗿𝗳𝗮𝗰𝗲)
প্রক্রিয়াজাত তথ্য ব্যবহারকারীর কাছে স্মার্টফোন অ্যাপ, ওয়েবসাইট বা অ্যালেক্সার মতো ভয়েস সহকারীর মাধ্যমে প্রদর্শিন করা হয়।
সরল প্রক্রিয়া (𝗦𝗶𝗺𝗽𝗹𝗶𝗳𝗶𝗲𝗱 𝗣𝗿𝗼𝗰𝗲𝘀𝘀):
সেন্সর (𝗦𝗲𝗻𝘀𝗼𝗿𝘀) → সংযোগ (𝗖𝗼𝗻𝗻𝗲𝗰𝘁𝗶𝘃𝗶𝘁𝘆) → ক্লাউড প্রক্রিয়াকরণ (𝗖𝗹𝗼𝘂𝗱 𝗣𝗿𝗼𝗰𝗲𝘀𝘀𝗶𝗻𝗴) → ব্যবহারকারীর মিথস্ক্রিয়া (𝗨𝘀𝗲𝗿 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗿𝗮𝗰𝘁𝗶𝗼𝗻)

ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧) নিরাপত্তা: এটা কতটা নিরাপদ?

𝗜𝗼𝗧 গ্রহণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি হলো নিরাপত্তা ঝুঁকি। যেহেতু 𝗜𝗼𝗧 ডিভাইসগুলো ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকে, সেহেতু এই ডিভাইস গুলো সাইবার আক্রমণের ঝুঁকিতে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সাধারণ 𝗜𝗼𝗧 নিরাপত্তা ব্যবস্থা:
💠 এনক্রিপশন: তথ্য প্রেরণের সময় এটি তথ্যকে সুরক্ষিত করে।
💠 অথেন্টিকেশন: শুধুমাত্র অনুমোদিত ডিভাইস/ব্যবহারকারীরা সিস্টেম অ্যাক্সেস নিশ্চিত করে।
💠নিয়মিত আপডেট: ডিভাইস ফার্মওয়্যারের দুর্বলতাগুলো নিয়মিত প্যাচ (𝗣𝗮𝘁𝗰𝗵𝗲) করে।
💠 ফায়ারওয়াল এবং অনুপ্রবেশ সনাক্তকরণ সিস্টেম: সন্দেহজনক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ এবং ব্লক করে।
মূল নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ (𝗞𝗲𝘆 𝗦𝗲𝗰𝘂𝗿𝗶𝘁𝘆 𝗖𝗵𝗮𝗹𝗹𝗲𝗻𝗴𝗲𝘀)
🔷 দুর্বল পাসওয়ার্ড: অনেক ডিভাইস ডিফল্ট/দুর্বল পাসওয়ার্ড দিয়ে পাঠানো হয় যা খুব কমই পরিবর্তন করা হয়ে থাকে।
🔷 আনপ্যাচড দুর্বলতা: কিছু নির্মাতারা অল্প সময়ের পরে আপডেট প্রদান বন্ধ করে দেয়।
🔷 লিমিটেড প্রসেসিং পাওয়ার: ছোট 𝗜𝗼𝗧 ডিভাইসগুলো উন্নত সিকিউরিটি সিস্টেম সাপোর্ট নাও করতে পারে।
🔷 সাপ্লাই চেইন ঝুঁকি: উৎপাদনের সময় ক্ষতিগ্রস্থ (𝗖𝗼𝗺𝗽𝗿𝗼𝗺𝗶𝘀𝗲𝗱) উপাদানগুলো লুকানোর কারণে নিরাপত্তা হুমকি তৈরি হতে পারে।
🔷 বটনেট এক্সপ্লোইটেশন: হ্যাক হওয়া 𝗜𝗼𝗧 ডিভাইসগুলো বড় আকারের হ্যাকিং বা আক্রমণের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমনটি 𝗠𝗶𝗿𝗮𝗶 𝗯𝗼𝘁𝗻𝗲𝘁 এর ক্ষেত্রে দেখা গেছে।

ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧)-তে গোপনীয়তা সংক্রান্ত উদ্বেগ

ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧) ডিভাইসগুলো প্রচুর পরিমাণে ব্যক্তিগত এবং সংবেদনশীল তথ্য সংগ্রহ করে, যা গোপনীয়তার উদ্বেগ বাড়ায়।

গোপনীয়তার মূল সমস্যা:

১. ডেটা ট্র্যাকিং: স্মার্ট স্পিকারের মতো ডিভাইসগুলো কথোপকথন (𝗖𝗼𝗻𝘃𝗲𝗿𝘀𝗮𝘁𝗶𝗼𝗻𝘀) রেকর্ড করতে পারে।
২. ডেটা শেয়ারিং: কিছু কোম্পানি বিজ্ঞাপনের জন্য তৃতীয় পক্ষের সাথে ব্যবহারকারীর তথ্য শেয়ার করে।
৩. ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণের অভাব: ব্যবহারকারীরা হয়তো জানেন না যে তাদের তথ্য কীভাবে সংগ্রহ, সংরক্ষণ বা ব্যবহার করা হয়।
৪. অবস্থান ট্র্যাকিং: পরিধেয় (যে ডিভাইস গুলো আমার পরিধান করি। যেমন - স্মার্ট ওয়াচ, হেডফোন) এবং স্মার্ট ডিভাইসগুলো ব্যবহারকারীর অবস্থান প্রকাশ/ফাঁস করতে পারে।

𝗜𝗼𝗧 গোপনীয়তার জন্য সেরা অনুশীলন:

  • ডিভাইস কেনার আগে গোপনীয়তা নীতিগুলো ভালোভাবে পড়ুন।
  • 𝗚𝗣𝗦 এর মতো অব্যবহৃত ডিভাইস ফিচার গুলো বন্ধ করুন।
  • শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন এবং দ্বি-ফ্যাক্টর প্রমাণীকরণ (𝘁𝘄𝗼-𝗳𝗮𝗰𝘁𝗼𝗿 𝗮𝘂𝘁𝗵𝗲𝗻𝘁𝗶𝗰𝗮𝘁𝗶𝗼𝗻) অন/চালু করুন।

নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা সম্পর্কিত উদ্বেগ

আইওটিতে নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। নিরাপত্তা লঙ্ঘন বা বিঘ্নিত হওয়ার ফলে ব্যক্তিগত তথ্যের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে এবং ব্যক্তি নিজেও হুমকি বা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটি হ্যাক করা স্মার্ট সিকিউরিটি ক্যামেরা আপনার বাড়ির ভেতর থেকে লাইভ ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করতে পারে।

হাই-প্রোফাইল আইওটি নিরাপত্তা ঘটনা:

মিরাই বটনেট আক্রমণ (২০১৬): ২০১৬ হ্যাক করা আইওটি ডিভাইসগুলো একটি বিশাল 𝗗𝗗𝗼𝗦 আক্রমণ শুরু করতে ব্যবহার করা হয়েছিল, যা প্রধান ওয়েবসাইটগুলোকে ব্যাহত/ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। বিভিন্ন পরিবারে গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য স্মার্ট বেবি মনিটর হ্যাক করা হয়েছিল। বর্তমানে গাড়িতে ব্যবহৃত ডিভাইস গুলোকে হ্যাক করার মাধ্যমে যানবাহন সিস্টেমের উপর রিমোটলি কন্ট্রোল করা যায়।

ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧)-এর ভবিষ্যৎ

বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদ্ভাবনের সাথে সাথে ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧)-এর ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জ্বল। কিন্তু নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে সাইবার নিরাপত্তার উপরও বিশেষ জোর দেওয়া প্রয়োজন।

সম্ভাবনাময় 𝗜𝗼𝗧 প্রবণতা:

১. ৫জি-চালিত 𝗜𝗼𝗧: অতি-দ্রুত নেটওয়ার্কগুলো রিয়েল-টাইম রিমোট সার্জারি, অটোনোমাস যানবাহন এবং শিল্প অটোমেশনকে সক্ষমতা প্রদান করেছে।
২. এজ (𝗘𝗱𝗴𝗲) কম্পিউটিং: ক্লাউডে সব ধরনের তথ্য পাঠানোর পরিবর্তে স্থানীয়ভাবে ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করে বিলম্বিতা হ্রাস করা।
৩. এআই এবং মেশিন লার্নিং ইন্টিগ্রেশন: এমন ডিভাইস যা ব্যবহারকারীর আচরণকে শেখে এবং মানিয়ে নেয়, ভবিষ্যদ্বাণী করে এবং কাজগুলোকে স্বয়ংক্রিয় করে তোলে।
৪. গ্রীন 𝗜𝗼𝗧: শক্তি ও দক্ষ ডিভাইস ব্যবহারের লক্ষ্য হলো পরিবেশগত প্রভাব হ্রাস করা।
৫. 𝗜𝗼𝗧 নিরাপত্তার জন্য ব্লকচেইন: আস্থা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি এবং টেম্পারিং প্রতিরোধের জন্য বিকেন্দ্রীভূত সিস্টেম (𝗗𝗲𝗰𝗲𝗻𝘁𝗿𝗮𝗹𝗶𝘇𝗲𝗱 𝘀𝘆𝘀𝘁𝗲𝗺𝘀)।

শিল্প বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧)

💠 স্বাস্থ্যসেবা: দূরবর্তী রোগী পর্যবেক্ষণ এবং স্মার্ট চিকিৎসা ডিভাইস।
💠 স্মার্ট শহর: সংযুক্ত ট্র্যাফিক লাইট, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ।
💠 কৃষি: মাটি সেন্সর এবং স্বয়ংক্রিয় সেচ সহ নির্ভুল কৃষিকাজ।
💠 উৎপাদন: ডাউনটাইম কমাতে পূর্বাভাসমূলক রক্ষণাবেক্ষণ।

ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧)-এর সামনের চ্যালেঞ্জগুলো:

  • সর্বজনীন 𝗜𝗼𝗧 সুরক্ষা মান তৈরি করা।
  • 𝗚𝗗𝗣𝗥 এবং 𝗖𝗖𝗣𝗔 এর মতো ডেটা গোপনীয়তা বিধিমালার সাথে উদ্ভাবনের ভারসাম্য বজায় রাখা।
  • নিরাপত্তার সাথে আপস না করে 𝗜𝗼𝗧 অ্যাক্সেসযোগ্য থাকে তা নিশ্চিত করা।

উপসংহার

ইন্টারনেট অফ থিংস বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি ডিভাইস সংযুক্ত করে শিল্প, ঘরবাড়ি এবং দৈনন্দিন জীবনকে অনেক সহজ করেছে এবং রূপান্তরিত করছে। যদিও এটি অসাধারণ সুবিধা এবং দক্ষতা প্রদান করে, এটি গুরুতর নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তার চ্যালেঞ্জও তৈরি করে। 𝗜𝗼𝗧 থেকে সম্পূর্ণরূপে উপকৃত হওয়ার জন্য, ব্যক্তি এবং সংস্থাগুলোকে অবশ্যই:
  • শক্তিশালী সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
  • ভবিষ্যত হুমকি সম্পর্কে আপডেট থাকতে হবে।
  • দীর্ঘমেয়াদী আপডেট সাপোর্ট সহ স্বনামধন্য নির্মাতাদের থেকে ডিভাইসগুলো বেছে নিন।

👇 সচরাচর জিজ্ঞাসা

প্রশ্ন: ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧)-তে দৈনন্দিন জিনিসপত্র কীভাবে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত হয়?
উত্তর: দৈনন্দিন জিনিসপত্র ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧)-এ, ইন্টারনেট প্রোটোকল (𝗜𝗣) এবং ট্রান্সমিশন কন্ট্রোল প্রোটোকল (𝗧𝗖𝗣) ব্যবহার করে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত করা হয়। এই প্রোটোকলগুলো 𝗪𝗶-𝗙𝗶, ইথারনেট, ব্লুটুথ এবং সেলুলার নেটওয়ার্কের মতো নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডিভাইসগুলোকে ইন্টারনেটের সাথে এবং একে অপরের সাথে সংযুক্ত করার মাধ্যমে গুনগতমান নিশ্চিত করে।

প্রশ্ন: 'স্মার্ট' ডিভাইসগুলো কী?
উত্তর: "স্মার্ট" ডিভাইসগুলো হল কম্পিউটারের মতো ভৌত/ফিজিক্যাল বস্তু যা সেন্সর এবং সফ্টওয়্যার দিয়ে সজ্জিত যা ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকে বা ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যোগাযোগ করে, প্রায়শই খুব কম মানুষের হস্তক্ষেপ (𝗶𝗻𝘁𝗲𝗿𝘃𝗲𝗻𝘁𝗶𝗼𝗻) ছাড়াই, ডেটা সংগ্রহ এবং ডেটা শেয়ার করে। এই ডিভাইসগুলো ইন্টারনেট অফ থিংস (𝗜𝗼𝗧) এর একটি মূল উপাদান। 𝗜𝗼𝗧 হল ভৌত বস্তুর একটি বিশাল নেটওয়ার্ক যা ডেটা কানেক্ট এবং বিনিময়ের জন্য সেন্সর এবং সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url