আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) কি: ইতিহাস, প্রকারভেদ, কার্যপ্রণালী ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

𝗔𝗿𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝗰𝗲 (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স) একবিংশ শতাব্দীতে যতগুলো প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী ও শক্তিশালী প্রযুক্তিতে পরিনত হয়েছে। নেটফ্লিক্স এবং ইউটিউবে সুপারিশ ব্যবস্থা (𝗣𝗼𝘄𝗲𝗿𝗶𝗻𝗴 𝗥𝗲𝗰𝗼𝗺𝗺𝗲𝗻𝗱𝗮𝘁𝗶𝗼𝗻) চালু করা থেকে শুরু করে চিকিৎসা ক্ষেত্রে অগ্রগতি সক্ষম করা পর্যন্ত, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (𝗔𝗜) বর্তমানে আর কোনও ভবিষ্যতবাদী ধারণা নয় - 𝗔𝗜 (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশে পরিণত হয়েছে। আমরা যখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (𝗔𝗜) সম্পর্কে আলোচনা করি তখন 'এআই' এর সুবিধা, অসুবিধা বা ব্যবহারকে ঘিরে আবর্তিত হয়। কিন্তু 'এআই' মানুষের জীবনে এর চেয়ে অনেক বেশি। এই প্রযুক্তিকে সত্যিকার অর্থে বুঝতে হলে, আমাদের এর সংজ্ঞা, ইতিহাস, প্রকার, কৌশল, কাজ করার প্রক্রিয়া, নীতিশাস্ত্র (𝗘𝘁𝗵𝗶𝗰𝘀) এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনাগুলো সম্পর্কে জানতে হবে।

(AI) আর্টিকেল শেষে যা যা জানবেন

  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কী?
  • (𝗔𝗜)-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং পাইওনিয়ার
  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সর শাখা
  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সর প্রকারভেদ
  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সর পিছনে মূল কৌশল কি?
  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বনাম হিউম্যান ইন্টেলিজেন্স
  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সর মূল উপাদান
  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সর জীবনচক্র
  • দৈনন্দিন জীবনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সর
  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের নৈতিক ও সামাজিক উদ্বেগ
  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং বিগ ডেটা
  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ভবিষ্যৎ
  • উপসংহার

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কী?

𝗔𝗿𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝗰𝗲 (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) হলো মেশিন দ্বারা মানুষের বুদ্ধিমত্তার অনুকরণ করানো। সহজ ভাষায়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স (𝗔𝗿𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝗰𝗲) হলো মানুষ যেভাবে চিন্তা ভাবনা করে, কৃত্তিম উপায়ে কম্পিউটারকে সেভাবে চিন্তা ভাবনা করার সক্ষমতার রূপদান করাকে 𝗔𝗿𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝗰𝗲 বা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা বলা হয়।কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (𝗔𝗜) সিস্টেমগুলো এমন সব কাজ সম্পাদনের জন্য ডিজাইন করা হয়ে থাকে যে কাজ গুলো করার জন্য সাধারণত মানুষের ক্ষেত্রে চিন্তাভাবনার প্রয়োজন হয়, যেমন সমস্যা সমাধান, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, তথ্য থেকে শেখা এবং প্রাকৃতিক ভাষা বোঝা ইত্যাদি। যেখানে ট্রাডিশনাল কম্পিউটার প্রোগ্রাম গুলো একটি নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করে কাজ করে, বিপরীতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অভিজ্ঞতার মাধ্যমে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে এবং উন্নত করতে পারে।

অধিকাংশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গবেষক ও লেখকের মতে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা হলো- "𝗧𝗵𝗲 𝘀𝘁𝘂𝗱𝘆 𝗮𝗻𝗱 𝗱𝗲𝘀𝗶𝗴𝗻 𝗼𝗳 𝗶𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝘁 𝗮𝗴𝗲𝗻𝘁𝘀, 𝘄𝗵𝗲𝗿𝗲 𝗮𝗻 𝗶𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝘁 𝗮𝗴𝗲𝗻𝘁 𝗶𝘀 𝗮 𝘀𝘆𝘀𝘁𝗲𝗺 𝘁𝗵𝗮𝘁 𝗽𝗲𝗿𝗰𝗲𝗶𝘃𝗲𝘀 𝗶𝘁𝘀 𝗲𝗻𝘃𝗶𝗿𝗼𝗻𝗺𝗲𝗻𝘁 𝗮𝗻𝗱 𝘁𝗮𝗸𝗲𝘀 𝗮𝗰𝘁𝗶𝗼𝗻𝘀 𝘁𝗵𝗮𝘁 𝗺𝗮𝘅𝗶𝗺𝗶𝘇𝗲 𝗶𝘁𝘀 𝗰𝗵𝗮𝗻𝗰𝗲𝘀 𝗼𝗳 𝘀𝘂𝗰𝗰𝗲𝘀𝘀." অর্থাৎ কম্পিউটার বিজ্ঞানের এই শাখা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন এজেন্ট (𝗔𝗴𝗲𝗻𝘁) কীভাবে তৈরি করা যায় তা সম্পর্কে কাজ করে। এখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন এজেন্ট বলতে এমন একটি সিস্টেম বুঝায় যা চারপাশ প্রত্যক্ষ করে সর্বোচ্চ সাফল্য বা ফলাফল পাওয়ার জন্য যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা দরকার, সে অনুসারে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, যখন আপনি গুগলে কিছু অনুসন্ধান করেন, তখন সিস্টেমটি কেবল এলোমেলো ফলাফল দেখায় না - এটি আপনার সার্চ ইতিহাস, অবস্থান এবং কোটি কোটি অন্যান্য ডেটা পয়েন্টের উপর ভিত্তি করে সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক রেজাল্ট দেখানোর বা আপনি কি চাচ্ছেন সেটি প্রেডিক্ট (অনুমান করা) করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অ্যালগরিদম ব্যবহার করে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সর প্রতিষ্ঠাতা এবং পাইওনিয়ার

আজকের 𝗔𝗿𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝗰𝗲 (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) রাতারাতি তৈরি হয়নি। বর্তমান (𝗔𝗜)-এর পেছনে রয়েছে কিছু পরিশ্রমী বিজ্ঞানীর অক্লান্ত শ্রম ও মেধা। সেই কয়েকজন অগ্রণী বিজ্ঞানীর দৃষ্টিভঙ্গি (ভিশন) ছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশ সম্ভব হত না। তাদের ভূমিকা ও অবদান নিম্নে বর্ণনা করা হলো।
🔷 জন ম্যাকার্থি (১৯২৭-২০১১):
জন ম্যাকার্থি (𝗝𝗼𝗵𝗻 𝗠𝗰𝗖𝗮𝗿𝘁𝗵𝘆) কে 𝗔𝗿𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝗰𝗲 (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা)-র জনক বলা হয়। তিনি একজন আমেরিকান কম্পিউটার বিজ্ঞানী। জন ম্যাকার্থি "𝗔𝗜-এর জনক" নামে পরিচিত। ম্যাকার্থি ১৯৫৬ সালে ডার্টমাউথ সম্মেলনের সময় 𝗔𝗿𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝗰𝗲 (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন। তিনি লিস্প প্রোগ্রামিং ভাষাও (𝗟𝗶𝘀𝗽 𝗽𝗿𝗼𝗴𝗿𝗮𝗺𝗺𝗶𝗻𝗴 𝗹𝗮𝗻𝗴𝘂𝗮𝗴𝗲) তৈরি করেছিলেন, যা 𝗔𝗜 গবেষণার ভিত্তিপ্রস্তর হয়ে ওঠে।
🔷 অ্যালান টুরিং (১৯১২-১৯৫৪):
অ্যালান টুরিং (𝗔𝗹𝗮𝗻 𝗧𝘂𝗿𝗶𝗻𝗴)-কে প্রায়শই "কম্পিউটার বিজ্ঞানের জনক" হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অ্যালান টুরিং একটি প্রশ্ন করতে। প্রশ্নটি হলো "মেশিন কি চিন্তা করতে পারে?" তার এই প্রশ্নটি বিখ্যাত প্রশ্ন হিসেবে পরিচিত। তার এই প্রশ্নের উপর ভিত্তি করেই 𝗔𝗜-এর তাত্ত্বিক ভিত্তি (𝗧𝗵𝗲𝗼𝗿𝗲𝘁𝗶𝗰𝗮𝗹 𝗙𝗼𝘂𝗻𝗱𝗮𝘁𝗶𝗼𝗻) স্থাপন করেছিলেন। অ্যালান টুরিং মেশিনের বুদ্ধিমত্তা পরিমাপের জন্য একটি পরীক্ষার প্রস্তাব করেছিলেন যেটি "টুরিং পরীক্ষা (𝗧𝘂𝗿𝗶𝗻𝗴 𝗧𝗲𝘀𝘁)" নামে পরিচিত। তার প্রস্তাবিত "টুরিং পরীক্ষা (𝗧𝘂𝗿𝗶𝗻𝗴 𝗧𝗲𝘀𝘁)" মেশিনের বুদ্ধিমত্তা পরিমাপের জন্য একটি মানদণ্ড (𝗕𝗲𝗻𝗰𝗵𝗺𝗮𝗿𝗸) হিসেবে রয়ে গেছে।
🔷 মারভিন মিনস্কি (১৯২৭-২০১৬):
মারভিন মিনস্কি (𝗠𝗮𝗿𝘃𝗶𝗻 𝗠𝗶𝗻𝘀𝗸𝘆) হলেন 𝗠𝗮𝘀𝘀𝗮𝗰𝗵𝘂𝘀𝗲𝘁𝘁𝘀 𝗜𝗻𝘀𝘁𝗶𝘁𝘂𝘁𝗲 𝗼𝗳 𝗧𝗲𝗰𝗵𝗻𝗼𝗹𝗼𝗴𝘆 (𝗠𝗜𝗧)-র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ল্যাবরেটরির সহ-প্রতিষ্ঠাতা। মারভিন মিনস্কি এবং জন ম্যাকার্থি একত্রে ১৯৫৯ সালে (𝗠𝗜𝗧)-র 𝗔𝗿𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝗰𝗲 𝗟𝗮𝗯𝗼𝗿𝗮𝘁𝗼𝗿𝘆 প্রতিষ্ঠা করেন। মিনস্কি মেশিনের উপলব্ধি এবং শেখার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অবদান রেখেছিলেন।
🔷 হারবার্ট এ. সাইমন এবং অ্যালেন নিউয়েল:
এই গবেষকরা ১৯৫০-এর দশকে লজিক থিওরিস্ট এবং জেনারেল প্রবলেম সলভারের (𝗦𝗼𝗹𝘃𝗲𝗿) মতো প্রাথমিক 𝗔𝗜 প্রোগ্রাম তৈরি করেছিলেন, যা প্রমাণ করেছিল যে মেশিন জটিল সমস্যা সমাধান করতে পারে।
এই অগ্রদূতরা একসাথে শুধুমাত্র 𝗔𝗜-এর একাডেমিক ভিত্তিই গঠন করেননি বরং কয়েক দশকের গবেষণাকেও ত্বরান্বিত ও অনুপ্রাণিত করেছেন যা আজও বিকশিত হচ্ছে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (𝗔𝗜)-এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা)-এর যাত্রা শুরু হয় ১৯৫৬ সালে ডার্টমাউথ সম্মেলনে (𝗗𝗮𝗿𝘁𝗺𝗼𝘂𝘁𝗵 𝗖𝗼𝗻𝗳𝗲𝗿𝗲𝗻𝗰𝗲)। কয়েক দশক ধরে আলোচনার পরে সেখানে "𝗔𝗿𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝗰𝗲 (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা)" শব্দটি প্রথম তৈরি করা হয়েছিল। নিম্নে সংক্ষিপ্ত আকারে ধারাবাহিক আলোচনা করা হলো।
💠 ১৯৬০-৭০-এর দশক:
সমস্যা সমাধান এবং প্রতীকী যুক্তির (𝗦𝘆𝗺𝗯𝗼𝗹𝗶𝗰 𝗥𝗲𝗮𝘀𝗼𝗻𝗶𝗻𝗴) উপর নজর রেখে এআই (𝗔𝗜) এর প্রাথমিক গবেষণা শুরু হয়।
💠 ১৯৮০-এর দশক:
শিল্প ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ব্যবস্থার (এক্সপার্ট সিস্টেম) উত্থান ঘটে।
💠 ১৯৯৭:
𝗜𝗕𝗠-এর 𝗗𝗲𝗲𝗽 𝗕𝗹𝘂𝗲 বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়ন গ্যারি কাসপারভ (𝗚𝗮𝗿𝗿𝘆 𝗞𝗮𝘀𝗽𝗮𝗿𝗼𝘃)-কে পরাজিত করে।
💠 ২০১১:
𝗜𝗕𝗠-এর ওয়াটসন, মানব চ্যাম্পিয়নদের (𝗛𝘂𝗺𝗮𝗻 𝗖𝗵𝗮𝗺𝗽𝗶𝗼𝗻𝘀) বিরুদ্ধে 𝗝𝗲𝗼𝗽𝗮𝗿𝗱𝘆 কুইজ শো জিতেছিল।
💠 ২০১৬:
𝗚𝗼𝗼𝗴𝗹𝗲 𝗗𝗲𝗲𝗽𝗠𝗶𝗻𝗱-এর 𝗔𝗹𝗽𝗵𝗮𝗚𝗼 একটি অত্যন্ত জটিল বোর্ড গেম 𝗚𝗼-তে একজন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে পরাজিত করে।
💠 ২০২০-এর দশক:
𝗖𝗵𝗮𝘁𝗚𝗣𝗧 এবং ইমেজ জেনারেটরের মতো জেনারেটিভ 𝗔𝗜 টুল কন্টেন্ট তৈরিতে বিপ্লব এনেছে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (𝗔𝗜) এর শাখা

বর্তমান যুগকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সর যুগ বললে নিশ্চয় ভুল হবেনা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (𝗔𝗿𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝗰𝗲) শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট শাখা বা ক্ষেত্র নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একটি বিশাল ক্ষেত্র যার মধ্যে বিভিন্ন শাখা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সর প্রতিটি শাখার মেশিনগুলো একটি নির্দিষ্ট ও নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে অনুকরণ করতে পারে। (𝗔𝗜) এর প্রতিটি শাখা মানব জীবনের ভিন্ন ধরণের সমস্যা সমাধানের কাজে ব্যবহৃত হয়। নিম্নে 𝗔𝗿𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝗰𝗲 (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা)-র শাখাগুলো বর্ণনা করা হলো।
১. মেশিন লার্নিং (𝗠𝗟):
মেশিন লার্নিং হলো আধুনিক 𝗔𝗜 এর মেরুদণ্ড। 𝗠𝗟 সিস্টেমগুলোকে ডেটা থেকে প্যাটার্ন শিখতে এবং পার্ফরম্যান্স উন্নত করতে সক্ষম করে। উদাহরণস্বরূপ, ইমেলে স্প্যাম ফিল্টার করার জন্য ও অবাঞ্ছিত ইমেলগুলো সনাক্ত এবং ব্লক করতে 𝗠𝗟 ব্যবহার করে।
২. ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং (𝗡𝗟𝗣):
𝗡𝗟𝗣 মেশিনগুলোকে মানুষের ভাষা বুঝতে এবং প্রক্রিয়া করতে সাহায্য করে। চ্যাটবট, অনুবাদ অ্যাপ (𝗧𝗿𝗮𝗻𝘀𝗹𝗮𝘁𝗶𝗼𝗻 𝗔𝗽𝗽𝘀) এবং ভয়েস সহকারী যেমন- 𝗦𝗶𝗿𝗶 বা 𝗔𝗹𝗲𝘅𝗮, 𝗡𝗟𝗣-এর উপর নির্ভর করে কাজ করে।
৩. কম্পিউটার ভিশন:
কম্পিউটার ভিশন মেশিনগুলোকে ছবি এবং ভিডিও ব্যাখ্যা করতে সক্ষম করে। মুখের স্বীকৃতি (𝗙𝗮𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗥𝗲𝗰𝗼𝗴𝗻𝗶𝘁𝗶𝗼𝗻), স্ব-চালিত গাড়ি এবং মেডিকেল ইমেজিংয়ে এটি ব্যবহৃত হয়।
৪. রোবোটিক্স:
𝗔𝗿𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝗰𝗲 (𝗔𝗜)-চালিত রোবটগুলো শিল্প, গুদাম এবং এমনকি অস্ত্রোপচারের জন্য স্বাস্থ্যসেবাতেও ব্যবহৃত হয়।
৫. এক্সপার্ট সিস্টেম:
চিকিৎসায় রোগ নির্ণয়ের মতো বিশেষ ক্ষেত্রে গুলোতে মানুষের সিদ্ধান্ত গ্রহণকে 𝗔𝗜 প্রোগ্রাম গুলো অনুকরণ করতে পারে।
৬. ডিপ লার্নিং:
মেশিন লার্নিং (𝗠𝗟) এর একটি শাখা যা মানব মস্তিষ্ক দ্বারা অনুপ্রাণিত কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে। ডিপ লার্নিং, চ্যাটজিপিটি, ইমেজ জেনারেশন, প্যাটার্ন, বক্তব্য (𝗦𝗽𝗲𝗲𝗰𝗵), ছবি সনাক্তকরণ এবং অটোনোমাস (𝗔𝘂𝘁𝗼𝗻𝗼𝗺𝗼𝘂𝘀) যানবাহনের মতো প্রযুক্তিগুলোকে শক্তিশালী করে।
৭. রি-ইনফোর্সমেন্ট লার্নিং (শক্তিবৃদ্ধি শিক্ষা):
এজেন্টদের (𝗔𝗴𝗲𝗻𝘁𝘀) পুরষ্কার এবং জরিমানার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেয় যাতে তারা গতিশীল (𝗗𝘆𝗻𝗮𝗺𝗶𝗰) পরিবেশে সেরা সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (𝗔𝗜) এর প্রকারভেদ

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ক্ষমতা এবং কার্যকারিতার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরণের শ্রেণীতে ভাগ করা যেতে পারে। নিম্নে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (𝗔𝗜) এর প্রকারভেদ বর্ননা করা হলো।

সক্ষমতার উপর ভিত্তি করে:

১. ন্যারো 𝗔𝗜 (দুর্বল 𝗔𝗜) – একটি নির্দিষ্ট কাজের জন্য তৈরি করা। যেমন- ভয়েস এসিস্ট্যান্ট (𝗦𝗶𝗿𝗶, 𝗔𝗹𝗲𝘅𝗮), গুগল ট্রান্সলেট, নেটফ্লিক্স সুপারিশ, অথবা স্প্যাম ফিল্টার। এটি তার নির্ধারিত ভূমিকার (যে কাজের জন্য প্রোগ্রাম তৈরি করা হয়েছে) বাইরে কাজ করতে পারে না।
২. জেনারেল 𝗔𝗜 (স্ট্রং 𝗔𝗜) – তাত্ত্বিক (𝗧𝗵𝗲𝗼𝗿𝗲𝘁𝗶𝗰𝗮𝗹) 𝗔𝗜 যা মানুষের মতো বুঝতে, শিখতে এবং যেকোনো বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ সম্পাদন করতে পারে। এটি বর্তমানে বিদ্যমান নেই তবে এ নিয়ে গবেষণা করার লক্ষ্য রয়েছে।
৩. সুপার 𝗔𝗜: এটি 𝗔𝗜 এর একটি ভবিষ্যৎ রূপ যা মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে, সুপার 𝗔𝗜 ভবিষ্যতের জন্য একটি ধারণামাত্র যেখানে মেশিনগুলো মানুষের বুদ্ধিমত্তা, সৃজনশীলতা এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যাবে। যদিও এটি এখনও কাল্পনিক (𝗛𝘆𝗽𝗼𝘁𝗵𝗲𝘁𝗶𝗰𝗮𝗹), এটি নীতিশাস্ত্র (𝗘𝘁𝗵𝗶𝗰𝘀) এবং নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে বিতর্কের উত্থান রয়েছে।

কার্যকারিতার উপর ভিত্তি করে:

১. রি-অ্যাকটিভ মেশিন: সহজ 'এআই' সিস্টেম যা মেমোরি ছাড়াই ইনপুটগুলোতে প্রতিক্রিয়া দেখায়, যেমন- আইবিএমের ডিপ ব্লু দাবা কম্পিউটার।
২. লিমিটেড মেমোরি: 'এআই' যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অতীতের ডেটা ব্যবহার করতে পারে, যেমন- স্ব-চালিত (𝗦𝗲𝗹𝗳-𝗗𝗿𝗶𝘃𝗶𝗻𝗴) গাড়ি।
৩. থিওরি অফ মাইন্ড: একটি উন্নত পর্যায় (এখনও ডেভেলপিংয়ের কাজ চলমান) যেখানে 'এআই' মানুষের আবেগ এবং উদ্দেশ্যকে বুঝতে পারে।
৪. সেল্ফ অ্যাওয়ার 'এআই': সবচেয়ে উন্নত রূপ (এখনও কাল্পনিক/𝗛𝘆𝗽𝗼𝘁𝗵𝗲𝘁𝗶𝗰𝗮𝗹), যেখানে 'এআই' এর নিজস্ব চেতনা এবং আত্ম-সচেতনতা থাকবে।
👉 𝗔𝗿𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝗰𝗲 (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা)-এর এই ধরণ ও প্রকারভেদ গুলো প্রমাণ করে যে 'এআই' আজকের ব্যবহারিক সরঞ্জাম থেকে ভবিষ্যতের সম্ভাবনা পর্যন্ত কীভাবে বিস্তৃত হতে পারে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (𝗔𝗜)-এর পিছনে মূল কৌশল কি?

𝗔𝗜 জাদুকরী বা অলৌকিকভাবে কাজ করে না; এটি মূলত বৈজ্ঞানিক কৌশলগুলোর উপর নির্ভর করে কাজ করে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (𝗔𝗜) সম্পূর্ণভাবে প্রোগ্রামিং নির্ভর একটি প্রযুক্তি। যে নির্দিষ্ট কাজের জন্য প্রোগ্রাম তৈরি করা হয় 𝗔𝗜 সেই প্রোগ্রামের উপর ভিত্তি করে কাজ করে। যেমন-
➡️ অ্যালগরিদম: অ্যালগরিদম হলো ধাপে ধাপে প্রদান করা নির্দেশাবলী যা 𝗔𝗜-কে সিদ্ধান্ত গ্রহণে নির্দেশ করে।
➡️ নিউরাল নেটওয়ার্ক: নিউরাল নেটওয়ার্ক হলো আন্তঃসংযুক্ত নোডের স্তর যা 𝗔𝗜-কে মানুষের মস্তিষ্কের অনুকরণ করতৈ সাহায্য করে।
➡️ ফাজি (𝗙𝘂𝘇𝘇𝘆) লজিক: ফাজি লজিক 𝗔𝗜-কে অনিশ্চয়তা এবং অসম্পূর্ণ ডেটা পরিচালনা (𝗛𝗮𝗻𝗱𝗹𝗲) করতে সহায়তা করে।
➡️ জেনেটিক অ্যালগরিদম: জেনেটিক অ্যালগরিদম হলো জৈবিক বিবর্তন (𝗕𝗶𝗼𝗹𝗼𝗴𝗶𝗰𝗮𝗹 𝗥𝘃𝗼𝗹𝘂𝘁𝗶𝗼𝗻) দ্বারা অনুপ্রাণিত সমস্যা সমাধানের একটি পদ্ধতি।
➡️ রি-ইনফোর্সমেন্ট লার্নিং: রি-ইনফোর্সমেন্ট লার্নিং হলো পুরষ্কার এবং শাস্তির মাধ্যমে শেখা, অনেকটা মানুষ যেভাবে নতুন দক্ষতা শেখে ঠিক তার মতো।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বনাম হিউম্যান ইন্টেলিজেন্স

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (𝗔𝗜)-কে প্রায়শই মানুষের বুদ্ধিমত্তার সাথে তুলনা করা হয়। মেশিনগুলো দ্রুত এবং আরও নির্ভুলভাবে ডেটা প্রক্রিয়া করতে পারে, কিন্তু মানুষ সৃজনশীলতা, আবেগ এবং নৈতিক যুক্তিতে পারদর্শী। উদাহরণস্বরূপ:
➡️ গতি: 𝗔𝗜 কয়েক মিনিটের মধ্যে লক্ষ লক্ষ মেডিকেল স্ক্যান বিশ্লেষণ করতে পারে, যেখানে একজন ডাক্তারের সময় লাগতে পারে কয়েক ঘন্টা।
➡️ সৃজনশীলতা: মানুষ আবেগগত গভীরতার সাথে উপন্যাস লিখতে বা সঙ্গীত রচনা করতে পারে কিন্তু 𝗔𝗜 এখনও এমন কিছু করতে পারেনা বা করার জন্য লড়াই করে।
➡️ আবেগগত বুদ্ধিমত্তা: মানুষ সহানুভূতি এবং নৈতিকতা বোঝে, যা 𝗔𝗜 প্রতিলিপি (𝗥𝗲𝗽𝗹𝗶𝗰𝗮𝘁𝗲) করতে পারে না।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (𝗔𝗜)-এর মূল উপাদান

𝗔𝗜 দিয়ে কার্যকরভাবে কাজ করানোর জন্য, চারটি অপরিহার্য উপাদান প্রয়োজন হয়। যেমন-
১. ডেটা: ডেটা হচ্ছে 𝗔𝗜 এর জ্বালানী। বৃহৎ ডেটাসেট ছাড়া, 𝗔𝗜 কোন কিছুই শিখতে পারে না।
২. অ্যালগরিদম: অ্যালগরিদম হচ্ছে 𝗔𝗜-এর মস্তিষ্ক যা ডেটা প্রক্রিয়া করে এবং সিদ্ধান্ত নেয়।
৩. কম্পিউটিং শক্তি: 𝗚𝗣𝗨 এবং ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের মতো উচ্চ-কার্যক্ষমতাসম্পন্ন হার্ডওয়্যার গুলো হাই-স্কেল 𝗔𝗜 মডেলগুলোকে সাপোর্ট করে।
৪. ট্রেনিং এবং টেস্টিং: 𝗔𝗜 মডেলগুলোকে বাস্তব-বিশ্বে ব্যবহারের আগে ডেটা দিয়ে প্রশিক্ষিত করা হয় এবং নির্ভুলতার জন্য পরীক্ষা করা হয়।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সর জীবনচক্র

𝗔𝗜 ডেভেলপমেন্ট একটি নির্দিষ্ট চক্র অনুসরণ করে। যেমন-
১. তথ্য সংগ্রহ: প্রাসঙ্গিক ডেটাসেট সংগ্রহ করা (যেমন- হেল্থ 𝗔𝗜 এর জন্য মেডিকেল রেকর্ড প্রয়োজন)।
২. প্রাক-প্রক্রিয়াকরণ: তথ্য পরিষ্কার এবং সংগঠিত করা।
৩. মডেল প্রশিক্ষণ: অ্যালগরিদম ব্যবহার করে 𝗔𝗜-কে শেখানো।
৪. পরীক্ষা: 𝗔𝗜 কতটা ভালো কাজ করে তা পরীক্ষা করা।
৫. ডিপ্লয়মেন্ট: বাস্তব-বিশ্বের সিস্টেমে 𝗔𝗜 বাস্তবায়ন করা।
৬. পর্যবেক্ষণ: 𝗔𝗜 কর্মক্ষমতা ক্রমাগত আপডেট এবং উন্নত করা।

দৈনন্দিন জীবনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স

দিন যত যাচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সর ব্যবহারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। 𝗔𝗜 এখন আর ল্যাবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। এটি আমাদের রুটিনের অংশে পরিণত হয়েছে।
➡️ স্বাস্থ্যসেবা: 𝗔𝗜 প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার সনাক্তকরণ এবং ওষুধ আবিষ্কারে সহায়তা করে।
➡️ বিনোদন: 𝗡𝗲𝘁𝗳𝗹𝗶𝘅 এবং 𝗦𝗽𝗼𝘁𝗶𝗳𝘆-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো সুপারিশগুলো ব্যক্তিগতকৃত (𝗣𝗲𝗿𝘀𝗼𝗻𝗮𝗹𝗶𝘇𝗲 𝗥𝗲𝗰𝗼𝗺𝗺𝗲𝗻𝗱𝗮𝘁𝗶𝗼𝗻𝘀) করতে 𝗔𝗜 ব্যবহার করে।
➡️ অর্থনীতি: 𝗔𝗜 রিয়েল টাইমে জালিয়াতি লেনদেন সনাক্ত করে।
➡️ পরিবহন: টেসলা এবং ওয়েমো স্বায়ত্তশাসিত (𝗔𝘂𝘁𝗼𝗻𝗼𝗺𝗼𝘂𝘀) ড্রাইভিংয়ের জন্য 𝗔𝗜 ব্যবহার করে।
➡️ ই-কমার্স: 𝗔𝗺𝗮𝘇𝗼𝗻 ব্যক্তিগতকৃত কেনাকাটার পরামর্শ এবং গুদাম (𝗪𝗮𝗿𝗲𝗵𝗼𝘂𝘀𝗲) অটোমেশনের জন্য 𝗔𝗜 ব্যবহার করে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের নৈতিক ও সামাজিক উদ্বেগ

𝗔𝗿𝘁𝗶𝗳𝗶𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗜𝗻𝘁𝗲𝗹𝗹𝗶𝗴𝗲𝗻𝗰𝗲 (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত বিষয়গুলো উত্থাপন করে। যেমন-
➡️ এআই-তে পক্ষপাত: 'এআই'-কে যে তথ্যের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় সেই তথ্যে কুসংস্কার থাকলে বা মানুষের পক্ষপাত থাকলে 'এআই' তা 𝗶𝗻𝗵𝗲𝗿𝗶𝘁 করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, মুখের স্বীকৃতি (𝗳𝗮𝗰𝗶𝗮𝗹 𝗿𝗲𝗰𝗼𝗴𝗻𝗶𝘁𝗶𝗼𝗻) সিস্টেমগুলো কালো চামড়ার ব্যক্তিদের জন্য উচ্চতর ত্রুটির হার দেখিয়েছে (এমআইটি মিডিয়া ল্যাব, ২০১৮)।
➡️ চাকরির স্থানচ্যুতি: ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মতে, 'এআই ২০২৫' সালের মধ্যে ৮৫ মিলিয়ন চাকরি প্রতিস্থাপন করতে পারে, তবে এটি ৯৭ মিলিয়ন নতুন চাকরিও তৈরি করতে পারে।
➡️ ডেটা গোপনীয়তা: 'এআই' সিস্টেমগুলো প্রায়শই প্রচুর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে, যা নজরদারির ক্ষেত্রে উদ্বেগ প্রকাশ করে।
➡️ স্বচ্ছতা: অনেক এআই মডেল "ব্ল্যাক বক্স", যার অর্থ এমনকি সিদ্ধান্ত গুলো কীভাবে নেওয়া হয় অনেক সময় ডেভেলপাররাও তা পুরোপুরি বুঝতে পারে না।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং বিগ ডেটা

𝗔𝗜 এবং বিগ ডেটা একে অপরের সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত। 𝗔𝗜-তে যত বেশি ডেটা থাকবে, এটি তত বেশি স্মার্ট হবে। উদাহরণস্বরূপ, নির্ভুলতা উন্নত করার জন্য 𝗚𝗼𝗼𝗴𝗹𝗲-এর 𝗔𝗜 ভাষার মডেলগুলোকে ইন্টারনেট থেকে শত শত কোটি শব্দের উপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ভবিষ্যৎ

𝗔𝗜-এর ভবিষ্যৎ একসাথে উত্তেজনাপূর্ণ এবং অনিশ্চিত। 𝗔𝗜 (কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা)-র ভবিষ্যত সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে কোন কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে কিছু সম্ভাব্য ডেভেলপমেন্ট অনুমান করা যেতে পারে। যেমন-
🔷 কোয়ান্টাম 𝗔𝗜: 𝗔𝗜-কে হাজার গুণ দ্রুততর করার জন্য কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ব্যবহার।
🔷 মানব-𝗔𝗜 সহযোগিতা: মানুষেকে রিপ্লেসমেন্ট করার পরিবর্তে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে 𝗔𝗜 মানুষকে সহায়তা করবে।
🔷 স্বাস্থ্যসেবা বিপ্লব: 𝗔𝗜 ভবিষ্যদ্বাণীর (𝗣𝗿𝗲𝗱𝗶𝗰𝘁𝗶𝗼𝗻𝘀) উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগতকৃত (𝗣𝗲𝗿𝘀𝗼𝗻𝗮𝗹𝗶𝘇𝗲𝗱) চিকিৎসা।
🔷 অটোনোমাস সিস্টেম: স্ব-চালিত গাড়ি থেকে 𝗔𝗜-চালিত শহর পর্যন্ত সব কিছুতেই অটোনোমাস সিস্টেম যুক্ত হবে।

তবে, 𝗔𝗜 যত শক্তিশালী হচ্ছে, নিয়ন্ত্রণ এবং শাসন (রেগুলেশন) সম্পর্কে বিতর্কও তত বাড়ছে। 𝗘𝗨 এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিশ্বব্যাপী সরকারগুলো ইতিমধ্যেই ন্যায্যতা, নিরাপত্তা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য 𝗔𝗜 আইন প্রণয়ন করছে।

উপসংহার

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শুধু একটি প্রযুক্তি নয়; এটি আধুনিক সভ্যতার চালিকাশক্তি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (𝗔𝗜) ইতিহাস, বিজ্ঞান, নীতিশাস্ত্র এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনার সাথে জড়িত একটি জটিল ক্ষেত্র। ইতিহাস, নীতি, বিজ্ঞান ও সম্ভাবনার সাথে যুক্ত এই প্রযুক্তি আমাদের ভবিষ্যৎকে পুনর্গঠন করছে। সামনের চ্যালেঞ্জ হলো 𝗔𝗜 কে দায়িত্বশীলতার সাথে ব্যবহার করা, উদ্ভাবনের সাথে নীতিশাস্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখা। দায়িত্বশীল ব্যবহার ও নৈতিকতার সাথে 𝗔𝗜 মানবকল্যাণে ব্যবহার করা গেলে এটি হবে ২১শ শতকের সবচেয়ে বড় অর্জন। 𝗔𝗜 যত বিকশিত হচ্ছে, একটি বিষয় নিশ্চিত: এটি ডিজিটাল যুগের একটি সীমানির্দেশক (𝗗𝗲𝗳𝗶𝗻𝗶𝗻𝗴) শক্তি হিসেবেই থাকবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url