জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা কয়টি-জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা গুলোর কাজ
জাতিসংঘ
হলো বৃহত্তর জাতিসংঘ ব্যবস্থার (UN System) একটি অংশ, যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন
প্রতিষ্ঠান এবং অঙ্গ সংস্থার একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্ক। বিশ্বব্যাপী শান্তি ও
ন্যায়বিচার বজায় রাখা থেকে শুরু করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রচার এবং
প্রশাসনিক কাজ সম্পাদন করা পর্যন্ত সকল কাজে প্রতিটি অঙ্গ সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে। শান্তি নিশ্চিত করা, মানবাধিকার রক্ষা করা এবং আন্তর্জাতিক
অগ্রগতি বৃদ্ধির মূল লক্ষ্য অর্জনে অঙ্গ সংস্থাগুলো একত্রে জাতিসংঘকে সহায়তা
করে।
আর্টিকেল শেষে যা জানবেন
জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন কয়টি
জাতিসংঘ (UN) হলো বিশ্বের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক সংস্থা। ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত
হয়েছিল দেশগুলোর মধ্যে শান্তি, নিরাপত্তা এবং সহযোগিতা প্রচারের জন্য। জাতিসংঘ
ছয়টি প্রধান অঙ্গের মাধ্যমে তার কার্য সম্পাদন করে, যার প্রতিটির নির্দিষ্ট
দায়িত্ব রয়েছে। জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা ৬ টি। যথা-
১. সাধারণ পরিষদ (General Assembly)
২. নিরাপত্তা পরিষদ (Security Council)
৩. অছি পরিষদ (Trusteeship Council)
৪. অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (Economic & Social Council)
৫. আন্তর্জাতিক আদালত (International Court of Justice)
৬. জাতিসংঘ সচিবালয় (United Nations Secretariat)
সাধারণ পরিষদ
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ (General Assembly of the United Nations (UNGA)) হলো
জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মিলিত হওয়ার জায়গা। জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর ( ছোট
বা বড় যাই হোক না কেন) একটি করে ভোটাধিকার রয়েছে। শান্তি, মানবাধিকার এবং
উন্নয়নের মতো বৈশ্বিক বিষয়গুলো নিয়ে সাধারণ পরিষদেই আলোচনা করা হয়। জাতিসংঘের
সাধারণ পরিষদ সকল প্রস্তাব পাস করে, জাতিসংঘের বাজেট অনুমোদন করে এবং দেশগুলোকে
একসাথে কাজ করতে সহায়তা করে। সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্তগুলো আইনত বাধ্যতামূলক
নয়, তবে তারা এই সিদ্ধান্ত বিশ্বের সম্মিলিত মতামত প্রদর্শন করে। সংক্ষেপে,
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ বিশ্বের সকল দেশের কণ্ঠস্বর।
সাধারণ পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ হলো এমন একটি স্থান যেখানে জাতিসংঘের সকল দেশ বিশ্বব্যাপী
বিষয় নিয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মিলিত হয়। এটি প্রতিটি দেশকে
বিশ্ব গঠনে তাদের মতামত প্রকাশের সুযোগ প্রদান করে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের
(UNGA) প্রধান কার্যাবলী নিম্নে সংক্ষেপে দেওয়া হলঃ
- মহাসচিব নিয়োগ করা।
- সাধারণ পরিষদের সভাপতি নির্বাচন করা।
- শান্তি, নিরাপত্তা, উন্নয়ন এবং মানবাধিকারের মতো বৈশ্বিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা।
- সদস্য রাষ্ট্রের চাঁদার পরিমাণ নির্ধারণ করা।
- সদস্য দেশকে বহিষ্কার করা।
- নিরাপত্তা পরিষদ এবং মানবাধিকার পরিষদের মতো অন্যান্য জাতিসংঘ সংস্থায় সদস্য নির্বাচন করা।
- জাতিসংঘের বাজেট অনুমোদন করা এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোর আর্থিক অবদান নির্ধারণ করা।
- অন্যান্য সংস্থার বার্ষিক রিপোর্ট পর্যালোচনা করা।
- সদস্য দেশগুলো এবং জাতিসংঘের অন্যান্য অঙ্গ সংস্থাগুলোর কাছে সুপারিশ করা।
- আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোতে (অ-বাধ্যতামূলক কিন্তু প্রভাবশালী) প্রস্তাব গ্রহণ করা।
- স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং পরিবেশের মতো ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সমন্বয় সাধন করা।
- বৈশ্বিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে ছোট বা বড় সকল দেশকে মতামত প্রদানের সুযোগ দেওয়া।
সাধারণ পরিষদ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নোট
➤ সাধারণ পরিষদের অপর নাম -- আলোচনা
পরিষদ।
➤ সাধারণ পরিষদের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত
হয় -- ১০ জানুয়ারি, ১৯৪৬।
➤ সাধারণ পরিষদের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত
হয় -- সেন্ট্রাল হল, ওয়েস্ট মিনিস্টার, লন্ডন।
➤ বার্ষিক অধিবেশন শুরু হয় -- সেপ্টেম্বর
মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মঙ্গলবার।
➤ সাধারণ পরিষদের প্রধানকে বলে --
সভাপতি; সভাপতির মেয়াদ ১ বছর।
➤ সাধারণ পরিষদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত
করা হয় -- ২১ জনকে।
➤ সাধারণ পরিষদের প্রথম সভাপতি -- পল
হেনরি স্মাক (বেলজিয়াম)।
➤ সাধারণ পরিষদের প্রথম নারী সভাপতি --
বিজয়ালক্ষ্মী পণ্ডিত (ভারত)।
➤ সাধারণ পরিষদে সভাপতির দায়িত্ব
পালনকারী একমাত্র বাংলাদেশি -- হুমায়ুন রশিদ (৪১তম অধিবেশনে)।
➤ জাতিসংঘের প্রত্যেক দেশ যে পরিষদের
সদস্য -- সাধারণ পরিষদ; সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রতিটি দেশ সর্বোচ্চ ৫ জন
প্রতিনিধি পাঠাতে পারে।
নিরাপত্তা পরিষদ
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ (UNSC) হলো বিশ্বের জরুরি প্রতিক্রিয়াশীল দলের মতো।
নিরাপত্তা পরিষদ আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য দায়ী। সাধারণ
পরিষদের বিপরীতে, নিরাপত্তা পরিষদ বাধ্যতামূলক সিদ্ধান্ত নিতে পারে, যেমন-
নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা বা সামরিক পদক্ষেপের অনুমোদন দেওয়া এবং বিশ্বজুড়ে সংঘাত
নিরসনে কাজ করে।
নিরাপত্তা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ (UNSC) হলো জাতিসংঘের সেই অংশ যা বিশ্বকে নিরাপদ রাখে।
এটি যুদ্ধ প্রতিরোধে সাহায্য করে, সংঘাত সমাধান করে। নিরাপত্তা পরিষদ এমন
সিদ্ধান্ত নিতে পারে যা সমস্ত দেশকে অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা
পরিষদের কার্যাবলী নিম্নে সংক্ষেপে দেওয়া হলঃ
- আন্তর্জাতিক বিরোধের নিষ্পত্তি এবং বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করা।
- নিষেধাজ্ঞা আরোপ বা সামরিক পদক্ষেপ অনুমোদনের মতো বাধ্যতামূলক সিদ্ধান্ত নেওয়।
- সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বিরোধ তদন্ত করা এবং সমাধানের পরামর্শ দেওয়।
- নিরাপত্তার জন্য হুমকি মোকাবেলায় দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।
- সংকট এবং যুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে মানবজীবন রক্ষা করা।
নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী (Permanent Five-P5) ৫টি সদস্য দেশের Veto Power রয়েছে।
Veto Power সম্পর্কে বিস্তারিত পড়তে
(জাতিসংঘ কি-জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস-জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য)
আর্টিকেলটি পড়ুন।
নিরাপত্তা পরিষদ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নোট
➤ নিরাপত্তা পরিষদের অপর নাম- স্বস্তি
পরিষদ।
➤ নিরাপত্তা পরিষদের সদর দপ্তর- নিউইয়র্ক,
যুক্তরাষ্ট্র।
➤ প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিল- ১১টি (স্থায়ী
৫টি এবং অস্থায়ী ৬টি)।
➤ বর্তমানে মোট সদস্য- ১৫টি দেশ (স্থায়ী
৫টি এবং অস্থায়ী ১০টি)।
➤ অস্থায়ী সদস্য দেশের মেয়াদ- ২ বছর।
➤ সর্বোচ্চ অস্থায়ী সদস্য নির্বাচিত হয়েছে-
জাপান (১১ বার)।
➤ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির মেয়াদকাল- ১
মাস।
➤ বাংলাদেশ অস্থায়ী সদস্য ছিল- ২ বার
(১৯৭৯-৮০ ও ২০০০-০১ সাল)।
অছি পরিষদ
ট্রাস্ট অঞ্চলগুলোকে স্বাধীন এবং স্ব-শাসিত হতে সাহায্য করার লক্ষে ট্রাস্টিশিপ
কাউন্সিল তৈরি করা হয়েছিল। অছি পরিষদ এই অঞ্চলগুলোকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং
সামাজিক উন্নয়নে পরিচালিত করতো। সমস্ত ট্রাস্ট অঞ্চল স্বাধীন হওয়ার পর থেকে অছি
পরিষদকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে, তবে এটি স্বাধীনতা এবং স্ব-শাসন প্রচারে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
অছি পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ
ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল অঞ্চলগুলোকে স্বাধীন হতে সাহায্য করেছিল এবং তাদের উন্নয়ন
ও কল্যাণ নিশ্চিত করেছিল। বর্তমানে এটি নিষ্ক্রিয়। অছি পরিষদের প্রধান কাজ ছিলো
উপনিবেশের অধীন দেশগুলোকে স্বাধীন করা।
অছি পরিষদ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নোট
➤ অছি পরিষদ গঠন করা হয়- ১৯৪৫ সালে।
➤ অছি পরিষদের কার্যক্রম স্থগিত হয়- ১৯৯৪
সালে পালাউ এর স্বাধীনতার পর থেকে।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ
অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (ECOSOC) জাতিসংঘের ৬টি অঙ্গ সংস্থার মধ্যে অন্যতম
গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এই সংস্থাটি অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত অগ্রগতির
মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য কাজ করে। এটি বিশ্বব্যাপী
চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে আলোচনা করার জন্য, উন্নয়ন সংক্রান্ত নীতি গঠন করতে এবং
একটি ন্যায্য এবং আরও টেকসই ভবিষ্যত গঠনের লক্ষ্যে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার
প্রচেষ্টার সমন্বয় সাধনের জন্য দেশগুলোকে একত্রিত করে।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ
- জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, বেকার সমস্যা সমাধান, শিক্ষা প্রসার ও মানবাধিকারসহ বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজ।
- অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত বিষয়ে বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা প্রচার করা।
- জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা এবং উন্নয়ন সম্পর্কিত কর্মসূচির কার্যক্রম সমন্বয় করা।
- মানুষ ও সমাজকে প্রভাবিত করে এমন প্রধান আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোর উপর গবেষণা পরিচালনা করে এবং প্রতিবেদন তৈরি করে।
- জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এবং সদস্য দেশগুলোকে নীতিগত পরামর্শ এবং সুপারিশ প্রদান করে।
- সকল জাতির মানবাধিকার এবং সামাজিক অগ্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় কাজ করে।
- বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সভা এবং সম্মেলন আয়োজন করে।
- টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) পর্যবেক্ষণ এবং সমর্থন করে।
- সরকার, বেসরকারি সংস্থা এবং অন্যান্য অংশীদারদের মধ্যে সংলাপের জন্য একটি ফোরাম প্রদান করে।
অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নোট
➤ বছরে অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়- ২ বার;
প্রতিটি অধিবেশন একমাস স্থায়ী হয়।
➤ অধিবেশন দু'টি দেশে বসে- একটি
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়, অপরটি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে।
➤ সদস্য দেশ-৫৪ টি; প্রতি বছর এক তৃতীয়াংশ
অবসর গ্রহণ করে।
আঞ্চলিক কমিশন
অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের অধীনে ৫টি আঞ্চলিক কমিশন রয়েছে। আঞ্চলিক কমিশন গুলোর
নাম ও সদর দপ্তর নিম্নে দেওয়া হলো।
আঞ্চলিক কমিশন | সদর দপ্তর |
---|---|
Economic Commission of Europe (ECE) | জেনেভা, সুইজারল্যান্ড |
Economic Commission of Africa (ECA) | আদ্দিস আবাবা, ইথিওপিয়া |
Economic Commission for Latin America and the Carribbean (ECLAC) | সান্টিয়াগো, চিলি |
Economic and Social Commission for Asia and the Pacific (ESCAP) | ব্যাংকক, থাইল্যান্ড |
Economic and Social Commission for Western Asia (ESCWA) | বৈরুত, লেবানন |
ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় অবস্থিত জাতিসংঘের আঞ্চলিক কমিশন।
থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অবস্থিত জাতিসংঘের আঞ্চলিক কমিশন।
আন্তর্জাতিক আদালত
আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (ICJ) হলো জাতিসংঘের প্রধান বিচার বিভাগীয়
সংস্থা। এই সংস্থা জাতিসংঘভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আইনি বিরোধ নিষ্পত্তি এবং
আন্তর্জাতিক আইনি বিষয়ে পরামর্শমূলক মতামত প্রদানের জন্য কাজ করে। সংস্থাটি
জাতিগুলোকে আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করার মাধ্যমে এবং বলপ্রয়োগের পরিবর্তে
সংলাপের মাধ্যমে দ্বন্দ্ব সমাধান করা হয় তা নিশ্চিত করে শান্তি ও ন্যায়বিচার
বজায় রাখতে সহায়তা করে।
আন্তর্জাতিক আদালতের গুরুত্বপূর্ণ কাজ
এই আদালতে কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা যায় না। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিরোধের
ক্ষেত্রে জাতিসংঘের যে কোন সদস্য রাষ্ট্র অন্য সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মামলা
করতে পারবে।
- আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে দেশগুলোর মধ্যে আইনি বিরোধ নিষ্পত্তি করে।
- জাতিসংঘ বা এর সংস্থাগুলো কর্তৃক উত্থাপিত আইনি প্রশ্নগুলোর উপর পরামর্শমূলক মতামত প্রদান করে।
- আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং চুক্তিগুলোর যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার জন্য তাদের ব্যাখ্যা করে।
- আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের সমাধান করে এবং জাতিগুলোর মধ্যে জবাবদিহিতা প্রচার করে।
- আইনি ও কূটনৈতিক উপায়ে শান্তিপূর্ণ সংঘাত সমাধানকে উৎসাহিত করে।
- বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক আইন ও ন্যায়বিচারের উন্নয়ন এবং প্রচারে অবদান রাখে।
আন্তর্জাতিক আদালত নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নোট
➤ প্রতিষ্ঠিত হয়- ১৯৪৫ সালে।
➤ সদর দপ্তর- নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরের
পিস প্যালেসে।
➤ সভাপতির মেয়াদ- ৩ বছর।
➤ বিচারক- ১৫ জন।
➤ বিচারকের মেয়াদ- ৯ বছর।
➤ যে দু'টি দেশ প্রথম মামলা করেছিল-
যুক্তরাজ্য ও আলবেনিয়া।
ICJ vs ICC vs PCA
“আন্তর্জাতিক আদালত” জাতিসংঘের একটি অঙ্গসংস্থা। কিন্তু “আন্তর্জাতিক অপরাধ
আদালত” এবং “স্থায়ী সালিশি আদালত” জাতিসংঘের কোনো অঙ্গসংস্থা নয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC)
➤ ICC-International Criminal Court
➤ সদর দপ্তর- নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে।
➤ বিচারক- ১৮ জন।
➤ বিচারকের মধ্যে-৭ জন নারী ও ১১ জন পুরুষ।
➤ বিচারকের মেয়াদ- ৯ বছর।
➤ ICC প্রতিষ্ঠিত হয়- রোম চুক্তি
স্বাক্ষরের মাধ্যমে।
➤ ‘রোম বিধি’ (Rome Statute) স্বাক্ষরিত
হয়- ১৭ জুলাই, ১৯৯৮ সালে।
➤ আদালতটি কার্যকর হয়- ১ জুলাই, ২০০২ সালে।
➤ যে সকল অপরাধের বিচার করে- গণহত্যার
অপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ এবং আগ্রাসনের অপরাধ।
➤ বিশেষত্ব- ICC জাতিসংঘের কোন অঙ্গসংস্থা
নয় এটি একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান।
স্থায়ী সালিশি আদালত (PCA)
➤ PCA-Permanent Court of Arbitration
➤ সদর দপ্তর- নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে।
➤ PCA প্রতিষ্ঠিত হয়- ১৮৯৯ সালে।
জাতিসংঘ সচিবালয়
জাতিসংঘ সচিবালয়কে জাতিসংঘের প্রশাসনিক কেন্দ্র বলা হয়। যা তার দৈনন্দিন কাজ
সম্পাদনের জন্য দায়ী থাকে। জাতিসংঘ সচিবালয় মহাসচিবের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়। সংক্ষেপে, সচিবালয় জাতিসংঘকে
সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে এবং বিশ্বব্যাপী সিদ্ধান্তগুলোকে বাস্তব কর্মে
রূপান্তরিত করে।
জাতিসংঘ সচিবালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাজ
- প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা।
- জাতিসংঘের অন্যান্য অঙ্গ সংস্থা কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং নীতি বাস্তবায়ন করে।
- জাতিসংঘের সকল কর্মসূচি এবং কার্যক্রমের জন্য প্রশাসনিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করে।
- বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক বিষয়গুলোর উপর গবেষণা পরিচালনা করে এবং প্রতিবেদন তৈরি করে।
- আন্তর্জাতিক সম্মেলন এবং সভা আয়োজন ও সমন্বয় করে।
- বিশ্বজুড়ে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম এবং মানবিক মিশন পরিচালনা করে।
- জাতিসংঘের বার্ষিক বাজেট প্রস্তুত করে এবং আর্থিক ও কর্মী ব্যবস্থাপনা তত্ত্বাবধান করে।
- গণমাধ্যম এবং প্রচারণার মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে জাতিসংঘের কাজ পৌঁছে দেয়।
- শান্তি, নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রচারে মহাসচিবকে সহায়তা করে।
আন্তর্জাতিক আদালত নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নোট
➤ সদর দপ্তর- নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র।
➤ প্রধান নির্বাহী- মহাসচিব।
➤ মহাসচিবের মেয়াদকাল- ৫ বছর।
➤ মহাসচিব যার সুপারিশে নির্বাচিত হন-
নিরাপত্তা পরিষদের।
➤ এ পর্যন্ত মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন- ৯
জন।
G4 Vs Coffee Club
➤ G-4 means Group of Four.
➤ G-4 Nations এর অন্তর্ভুক্ত ৪টি দেশ রয়েছে। যথা- জাপান, জার্মানি, ব্রাজিল ও
ভারত।
➤ G-4 Nations গঠিত হয়- ২০০৫ সালে।
➤ G-4 Nations গঠনের উদ্দেশ্য- নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ চায়।
Coffee Club কি?
কফি ক্লাব, যা ইউনিটিং ফর কনসেনসাস (UfC-Uniting for Consensus) গ্রুপ নামেও পরিচিত। জাতিসংঘের অভ্যন্তরে কিছু দেশর একটি অনানুষ্ঠানিক গ্রুপ। এই গ্রুপের সদস্য দেশগুলো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী আসন সম্প্রসারণের বিরোধিতা করে। ১৯৯০-এর দশকে ইতালি, পাকিস্তান, মেক্সিকো, মিশর এবং আর্জেন্টিনার মতো দেশগুলোর দ্বারা Coffee Club গঠিত হয়েছিল।
সদস্য দেশগুলো বিশ্বাস করতো যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আরও স্থায়ী সদস্য যোগ করলে কাউন্সিল কম গণতান্ত্রিক এবং আরও অসম হয়ে যাবে। তবে, পরিবর্তে কফি ক্লাব অস্থায়ী আসনের সংখ্যা বৃদ্ধিকে সমর্থন করে, যাতে আরও বেশি দেশ নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।
Coffee Club এর সদস্যদেশগুলো হলো Argentina (🇦🇷), Canada (🇨🇦), Colombia (🇨🇴), Costa Rica (🇨🇷), Italy (🇮🇹), Malta (🇲🇹), Mexico (🇲🇽), Pakistan (🇵🇰), South Korea (🇰🇷), San Marino (🇸🇲), Spain (🇪🇸), Turkey (🇹🇷)
সচরাচর জিজ্ঞাসাঃ
জাতিসংঘের প্রধান সংগঠন কয়টি ও কি কি?
জাতিসংঘের প্রধান সংগঠন ৬টি।
১. সাধারণ পরিষদ (General Assembly)
২. নিরাপত্তা পরিষদ (Security Council)
৩. অছি পরিষদ (Trusteeship Council)
৪. অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (Economic & Social Council)
৫. আন্তর্জাতিক আদালত (International Court of Justice)
৬. জাতিসংঘ সচিবালয় (United Nations Secretariat)
১. সাধারণ পরিষদ (General Assembly)
২. নিরাপত্তা পরিষদ (Security Council)
৩. অছি পরিষদ (Trusteeship Council)
৪. অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (Economic & Social Council)
৫. আন্তর্জাতিক আদালত (International Court of Justice)
৬. জাতিসংঘ সচিবালয় (United Nations Secretariat)
জাতিসংঘের সংস্থা কয়টি?
জাতিসংঘ হলো বৃহত্তর জাতিসংঘ ব্যবস্থার (UN System) একটি অংশ। জাতিসংঘের সংস্থা ৬টি।
Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url