গনোরিয়া রোগ কি-গনোরিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার

আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকি। অন্য সকল মাধ্যমগুলোর মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক বা যৌন সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। শারীরিক সম্পর্ক বা যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে যে রোগ ছড়িয়ে থাকে সেগুলোকে (STD) সেক্সচুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ বলে।
গনোরিয়া রোগ কি-গনোরিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার
সকল সেক্সচুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ এর মধ্যে গনোরিয়া অন্যতম। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে বিষয় হলো গনোরিয়া। এই পোস্টে আমরা গনোরিয়া রোগ কি বা গনোরিয়া রোগ কাকে বলে, গনোরিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানব।

সূচিপত্রঃ-গনোরিয়া রোগ কি-গনোরিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার

ভুমিকাঃ

গনোরিয়া একটি যৌনবাহিত রোগ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গনোরিয়া রোগের প্রকোপ অনেক বেশি। বিশেষ করে স্বল্পোন্নত বা উন্নত দেশগুলোতে এ রোগের সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের এই রোগের সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। এ রোগের জীবাণুর সাথে মানুষের রক্তের তেমন সম্পর্ক থাকে না। এই রোগটি বংশগতভাবেও ছড়ায় না। প্রধানত শারীরিক সম্পর্ক বা যৌন মিলনের ফলে এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে প্রবেশ করে। চলুন গনোরিয়া রোগ কি-গনোরিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।

গনোরিয়া রোগ কিঃ

গনোরিয়ার ইংরেজি হল Gonorrhea. এ রোগ সংক্রমণের প্রধান কারণ হলো শারীরিক সম্পর্ক বা যৌন মিলন। গনোরিয়া একটি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত এক ধরনের (STD) সেক্সচুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ। Neisseria Gonorrhoeae (নিশেরিয়া গনোরি) এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া আক্রমণে এ রোগের সংক্রমণ ঘটে।

আবিস্কারকঃ

পোল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করা জার্মান বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট নাইসার (Albert Ludwig Sigesmund Neisser) ১৮৭৯ সালে গন-নরিয়ার জীবাণু আবিস্কার করেন। এবং তার নাম অনুসারে এই রোগের ব্যাকটেরিয়ার নামকরণ করা হয় Neisseria Gonorrhoeae.

গনোরিয়ার রোগতত্ত্ব ও সুপ্তিকালঃ

প্রতি বছর সারা বিশ্বের প্রায় ৪৪৮ মিলিয়ন লোক সেক্সচুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ এ আক্রান্ত হয়ে থাকে। যার মধ্যে গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত প্রায় ৭৮ থেকে ৮৮ মিলিয়ন রোগী। ২০০৫ সালের এক রিপোর্টে দেখা যায় যুক্তরাজ্যে ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সে পুরুষদের মধ্যে প্রতি ১ লক্ষে ১৯৬ জন ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সের তরুণীদের মধ্যে প্রতি এক লক্ষে ১৩৩ জন গনোরিয়ায় আক্রান্ত হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছিল। অল্প বয়সী তরুণদের মধ্যে এ রোগে আক্রান্তের হার সবচেয়ে বেশি। ১৯৯০ সালে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় ১১০০ জন। এবং ২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী গনোরিয়ায় আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৯০০ জনের।

গনোরিয়ার সুপ্তিকালঃ

এ রোগ মানব শরীরে দুই থেকে ১৪ দিন সুপ্ত অবস্থায় থাকে। তবে চার দিন থেকে ছয় দিনের মধ্যে লক্ষণগুলো দেখা দেওয়া শুরু করে। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই রোগের প্রাথমিক আক্রমণের স্থান মত্র পথের সম্যক অংশ। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না হলে প্রস্ট্রেট গ্রন্থি, মূত্রথলি এমনকি শুক্রাশয় পর্যন্ত এই রোগ ছড়াতে পারে। এমনকি প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

গনোরিয়া লক্ষণ ও উপসর্গঃ

প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগের বাহ্যিক লক্ষণ প্রকাশ না পাওয়ায় এটি ব্যাপকভাবে বিস্তৃত যৌনবাহিত রোগ। নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে গনোরিয়া লক্ষণ উপসর্গ ভিন্ন হতে পারে। নিম্নে গনোরিয়া লক্ষণ ও উপসর্গ বর্ণনা করাঃ
পুরুষদের ক্ষেত্রে গনোরিয়া লক্ষণ ও উপসর্গঃ
  • মূত্র বিসর্জনের সময় জ্বালাপোড়া অনুভুত হয়।
  • লিঙ্গের অগ্রভাগে লালচে ভাব থাকে।
  • মূত্রনালিতে সংক্রমণের ফলে লিঙ্গপথে পুঁজ নিঃসৃত হতে পারে।
  • স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিবার মুত্রত্যাগের ইচ্ছা।
  • শুক্রাশয় ও অন্ডকোষে ব্যথা অনুভুত হওয়া।
  • মুত্রনালী পথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। ফলে প্রস্রাবে দেখা দিতে পারে। ফলে কিডনীতে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
  • অন্ডকোষ ফুলে যেতে পারে।
  • পুরুষ সমকামীদের পায়ুপথে মিলন করলে পায়ুপথে সংক্রমন হতে পারে। ফলে পায়ুপথে তীব্র ব্যথা ও পুঁজ নিঃসৃত হতে থাকে।
  • ওরাল সেক্স অভ্যস্তদের মুখে সংক্রমণ তথা ঘা সৃষ্টি হয় এবং গলা ব্যথা হয়।
  • দীর্ঘদিনের সংক্রমণের ফলে অস্থিসন্ধি প্রদাহ, মস্তিস্কের প্রদাহ, ত্বকে ক্ষত, সেপটিসেমিয়া এমনকি হৃৎপিন্ডের ক্ষতি হতে পারে।
  • পুরুষত্বহীন হয়ে যেতে পারে।
নারীদের ক্ষেত্রে গনোরিয়া লক্ষণ ও উপসর্গঃ
  • তলপেটে ব্যথা অনুভূত হয়ে থাকে।
  • যোনিপথে এবং মূত্রনালিতে জ্বালা-পোড়া করতে পারে।
  • দুই রজ:চক্রের মধ্যবর্তী সময়ে প্রচুর যোনিস্রাবসহ রক্তপাত হতে পারে।
  • অনিয়মিত রজঃচক্র।
  • জ্বর ও গায়ে ফুসকুঁড়ি।
  • কষ্টদায়ক যৌন মিলন।
  • কষ্টকর মুত্রত্যাগ।
  • যৌনাঙ্গ ফুলে যাওয়া ও যোনির ওষ্টে লালসহ দগদগে ঘা হয়।
  • যৌনিপথে অস্বাভাবিক রস (সাদা, সবুজ বা হলুদ) নিঃসরণ হয়।
  • বার্থোলিন গ্রন্থির প্রদাহ দেখা দিতে পারে।
  • ফ্যালোপিয়ান নালীতে প্রদাহ দেখা দেয়।
  • পায়ুপথে সংগম থেকে বা নিজের সংক্রমিত যৌনি থেকে মলদ্বারে সংক্রমন হতে পারে।
  • বন্ধত্ব দেখা দিতে পারে।
গনোরিয়ায় আক্রান্ত গর্ভবতী মহিলাদের প্রসবের আগেই চিকিৎসা করা আবশ্যক। অন্যথায় গর্ভের শিশু আক্রান্ত হয়ে অন্ধ হয়ে যেতে পারে। গনোরিয়ায় আক্রান্ত নারী ও পুরুষের উভয়ের মলাশয় থেকে স্রাব, মলদ্বারে চুলকানী, ক্ষত, রক্তপাত, মলত্যাগ করার সময় প্রচন্ড ব্যথা হতে পারে।

গনোরিয়া রোগের বিস্তারঃ

বড়দের পাশাপাশি অল্প বয়সের মেয়ে বা শিশুরাও গনোরিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। বিছানার চাদর, কাপড়চোপড়, তোয়ালে বা পোশাক এর মাধ্যমে বাচ্চারা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং ঘনবসতি হওয়ার ফলেও শিশুরা সংক্রমিত হতে পারে। সন্তান প্রসবের পর মাতৃ দেহ থেকেও সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
গনোরিয়া রোগ কি-গনোরিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার
যৌন মিলনের সময় আক্রান্ত দেহের বহিযৌনাঙ্গ, যোনি-মুখ ও পায়ু থেকে সংক্রমণ ঘটে। শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির দেহে হিরো স্থানান্তরিত হয়। এ রোগ প্রধানত যোনিপথ, মুখগহ্বর বা পায়ুপথের মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে। গনোরিয়ায় আক্রান্ত নারীর সাথে একবার শারীরিক সম্পর্ক করলে পুরুষদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ২০%।

অপরপক্ষে, গনোরিয়ায় আক্রান্ত এক পুরুষের সাথে একবার যৌন মিলনে একজন নারীর এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬০ থেকে ৮০%। কিন্তু সমকামী পুরুষদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকির মাত্রা অনেক বেশি। গনোরিয়ায় আক্রান্ত গর্ভবতী মায়ের সন্তানও আক্রান্ত হতে পারে। বিশেষ করে গর্ভের শিশুর চোখে এই রোগের আক্রমণ হয়ে থাকে।
গনোরিয়া রোগ কি-গনোরিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার
এই অবস্থাকে অফথালমিয়া নিওন্যাটোরাম বা নিওন্যাটাল কনজাংটিভাইটিস বলে। ভূমিষ্ঠ হওয়া বাচ্চারাও এই জীবাণু দ্বারা দূষিত বস্তুর মাধ্যমে আক্রান্ত হতে পারে। তাই প্রসব পরবর্তী সময়ে বাচ্চার ক্ষেত্রে গোসলের পানি, কাপড়চোপড়, তোয়ালে সহ সকল জিনিস পরিষ্কার ও জীবাণু মুক্ত রাখা প্রয়োজন।

গনোরিয়ার জটিলতা ও প্রতিরোধঃ

গনোরিয়ার ব্যাকটেরিয়া নারীদের জননতন্ত্রের মধ্যে প্রবেশের মাধ্যমে ডিম্বনালীতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আক্রান্ত মহিলাদের বন্ধ্যত্ব করে দিতে পারে। গর্ভবতী মহিলার যোনি হতে বাচ্চার চোখ গনরিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না পেলে বাচ্চা অন্ধ হয়ে যেতে পারে। পুরুষদের ক্ষেত্রে শূকরণ আলী বন্ধ হয়ে যাওয়া এমনকি অন্ডকোষ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যার ফলে যৌনরসে শুক্রানুর সংখ্যা হ্রাস পেয়ে পুরুষের বন্ধ্যাত ধরতে পারে।

গনোরিয়ার প্রতিরোধঃ

যেহেতু এটি একটি সেক্সচুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ সেহেতু এই রোগ প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হল একজন বৈধ সঙ্গিনীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক রাখা নিশ্চিতভাবে যার কোন গনোরিয়া নেই। বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকা। অবিবাহিত ও অবিবাহিতাদের ক্ষেত্রে যৌন কামনার উদ্রেক হলে নামাজ পড়া। বহুগামিতা পরিত্যাগ ও সঠিক পদ্ধতিতে কনডম ব্যবহারের মাধ্যমে এই রোগ সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধ করা সম্ভব। সব থেকে ভালো হয় ধর্মীয় অনুশাসনে জীবন যাপন করলে।

গনোরিয়ার চিকিৎসাঃ

যেহেতু গনেরিয়া একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ সেহেতু এই রোগের চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হয়। যেমন- সেফট্রায়াক্সন, এজিথ্রোমাইসিন, ডক্সিসাইক্লিন ইত্যাদি। চিকিৎসকগণ প্রাথমিক চিকিৎসার তিন মাস পর পুনঃপরীক্ষা-নিরীক্ষার সুপারিশ করে থাকেন। উপরোক্ত গনোরিয়ার লক্ষণ গুলো দেখা দেয়ার সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। কোন স্বামী গনোরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পরেই স্ত্রীর সাথে মিলন করলে স্ত্রীর ও গনোরিয়া হতে পারে।

স্ত্রীর মধ্যে গনরিয়ার লক্ষণ প্রকাশ না পেলেও স্ত্রী সংক্রমিত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই চিকিৎসা প্রয়োজন। অন্যথায় শুধু স্বামী রোগ মুক্তি হলে পরবর্তীতে স্ত্রীর সঙ্গে মিলনের ফলে স্বামী পুনরায় প্রভাক্রান্ত হতে পারে। গর্ভবতী মায়ের শিশুকে গনোরিয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে সঠিক সময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা নিতে হবে। সম্ভব হলে সকল গর্ভবতী মাকেই প্রসবের পূর্বে গনোরিয়া পরীক্ষা করানো উচিত।

‘ওরাল সেক্স’ গনোরিয়ার মাত্রা বুদ্ধির ভয়ংকর কারণঃ

শারীরিক সম্পর্ক বা যৌন মিলনের মাধ্যমে ছড়ানো এই গনোরিয়া রোগ খুব দ্রুত এন্টিবায়োটিক এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। যার ফলে ভবিষ্যতে বর্তমানের অ্যান্টিবায়োটিক গুলো আর কাজ করবে না। বর্তমানে কার্যকর কোন অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার না হয় মানুষের জন্য গনোরিয়া রোগ ভবিষ্যতে এর চাইতেও বেশি খারাপ প্রভাব ফেলবে।

WHO এর তথ্য মতে, নারী ও পুরুষের উভয়ের ই কনডম ব্যবহারে অনীহার কারণে গনোরিয়া ছড়িয়ে পড়ছে। এবং মুখমেহন বা ‘ওরাল সেক্স’ এর প্রবণতা গনোরিয়ার জীবাণুকে এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধই করে তুলছে। যা গনোরিয়াকে ভবিষ্যতে একটি ভয়ংকর মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে। অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, এই পরিস্থিতি গনোরিয়ার নিরাময় অনেক বেশি কঠিন হয়ে তুলেছে; কিছু ক্ষেত্রে তা হয়ে উঠেছে ‘অসম্ভব’।

উপসংহারঃ

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা গনোরিয়া রোগ কি বা কাকে বলে, গনোরিয়ার লক্ষণ ও প্রতিকার, গনোরিয়া চিকিৎসা, প্রতিরোধ, নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে গনোরিয়া হলে কি কি জটিলতা আসতে পারে সে সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানলাম। আপনাদের এই আর্টিকেলটি ভালো লাগলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে পারেন। সবাইকে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url