মুক্তা চাষ কি-মুক্তা চাষের পদ্ধতি

মুক্তা চাষ বর্তমানে কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। মুক্তা একটি মূল্যবান রত্ন। ঝিনুক চাষের মাধ্যমে এই মূল্যবান রত্ন আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে। প্রচীন কালে রাজা বাদশারা মুক্তা দিয়ে তৈরি গহনা ও অলংকার ব্যবহার করতেন। বর্তমানেও গহনা তৈরিতে মুক্তা-ঝিনুক ব্যবহৃত হচ্ছে।
মুক্তা চাষ কি-মুক্তা চাষের পদ্ধতি
অলংকার তৈরি ছাড়াও কিছু কিছু রোগের চিকিৎসায় মুক্তা-ঝিনুক ব্যবহৃত হয়। মুক্তার একমাত্র উৎস হলো ঝিনুক। প্রাকৃতিকভাবে ঝিনুকে মুক্তা উৎপন্ন হয়। প্রচীন কালে জেলে বা চাষীরা প্রকৃতি থেকে ঝিনুক আরহণ করে মুক্তা সংগ্রহ করতো। পরবর্তীতে ঝিনুক চাষের মাধ্যমে মুক্তা উৎপাদনের কৌশল আবিষ্কৃত হয় এবং বিশ্বব্যাপী মুক্তা উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।

সূচিপত্রঃ- মুক্তা চাষ কি-মুক্তা চাষের পদ্ধতি

মুক্তা চাষ কি

নিউক্লিয়াসরূপী বহিরাগত কণাকে মুল্লা-ঝিনুকের খোলকের ভেতর কৃত্রিম উপায়ে ঢুকিয়ে মুক্তা চাষ করলে প্রাকৃতিক উপায়ে সৃষ্ট মুক্তার চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক মুক্তা আহরণ সম্ভব।

মুক্তা চাষের ধাপঃ

মুক্তা চাষের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল, যান্ত্রিক ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। মুক্তা চাষের ধাপগুলো হচ্ছে- (ক) মুক্তা-ঝিনুক সপ্তাহ, (খ) মুক্তা-ঝিনুক পালন, (গ) নিউক্লিয়াস প্রবেশ করানো, (ঘ) মুক্তা আহরণ এবং (ঙ) মুক্তা পরিষ্কারকরণ।

(ক) মুক্তা-ঝিনুক সংগ্রহ

জাপানী মহিলা ডুবুরীরা মুক্তা-ঝিনুক সংগ্রহ করেন। তাঁদের আমা (Ama) বলে। আমা শব্দের অর্থ 'সাগরকন্যা' (The girls of Sea)। শৈশব থেকেই মহিলা ডুবুরীরা সাগরজলে ঝিনুক সংগ্রহে অভ্যন্ত। তবে মুক্তা-ঝিনুক সংগ্রহের আগে তারা বিশেষ ট্রেনিং নিয়ে, বিশেষ ধরনের টুপি ও পোশাক পড়ে নেন। তাদের হাতে থাকে একটি করে ছোট হাত-জাল। অভিজ্ঞ ডুবুরী সমুদ্রের ৫ মিটার পর্যন্ত গভীরতায় ডুব দিয়ে ১- ১.৫ মিনিট পর্যন্ত থাকতে পারেন। প্রতি ডুবুরী এক ডুবে গড়ে ৪০টি পর্যন্ত মুক্তা-ঝিনুক সংগ্রহ করেন। এ সব ঝিনুক সংগ্রহের আদর্শ সময় হচ্ছে গ্রীষ্মের দুই মাস এবং ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত।
তখন সাগর থাকে শান্ত, পানি থাকে পরিষ্কার। মুক্তা-ঝিনুক সংগ্রহের পর তা বাছাই করা হয়। বয়স অনুযায়ী মুক্তা-ঝিনুককে আলাদা করে দুবছর বয়সী ঝিনুকগুলো মুক্তা চাষ কেন্দ্রে নিয়ে আবার সমুদ্রের তলদেশে নির্ধারিত জায়গায় রেখে দেয়া হয়। তিন-চার বছর বয়সের ঝিনুকগুলোকে সমুদ্রের অগভীর ও অসমান তলদেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়। পরের বছরের এপ্রিল-মে মাসে সেগুলোকে তুলে এনে গবেষণাগারে নিউক্লিয়াস প্রবেশ করানো হয়।
লার্ভা সংগ্রহঃ মুক্তা-ঝিনুকের লার্ভা সবসময় আলোর বিপরীতমুখী হয় -এ তথ্যের ভিত্তিতে Mikimoto এক বিশেষ ধরনের লার্ভা-সংগ্রাহক আবিষ্কার করেন। এটি ২ সেন্টিমিটার ঘেরওয়ালা একটি তারের খাঁচা যা ৪৮ সে. মি. লম্বা, ৫৪ সে. মি. চওড়া এবং ২০ সে. মি. উচ্চতা সম্পন্ন। নোনা পানিতে যেন তারের জাল নষ্ট না হয় তার জন্য খাঁচায় আলকাতরা মেখে দেয়া হয় এবং তার অসমৃণ করার জন্য খাঁচার গায়ে বালির আস্তর দেয়া হয়, ফলে অমসৃণ গায়ে লার্ভাগুলো সহজেই লেগে থাকতে পারে।

খাঁচার তলদেশ ও পাশের গায়ে কালো বোর্ড লাগানো থাকে, ফলে এ অন্ধকার অংশে লার্ভাগুলো এসে জমা হয়। খাঁচাগুলোকে ভাসমান ভেলা থেকে ৬ মিটার গভীর পানিতে ঝুলিয়ে দেয়া হয়। জুলাই-নভেম্বর মাস পর্যন্ত খাঁচাগুলো পানিতে থাকে এবং এ সময়ের ভেতর বাচ্চা ঝিনুকগুলো ১.৫ সে. মি. লম্বা হয়। তখন এদের পালন খাঁচায় (Rearing cage) স্থানান্তরিত করা হয়।

(খ) মুক্তা-ঝিনুক পালন

বাচ্চা ঝিনুককে পালনের জন্য সংগ্রাহক খাঁচার মতোই পালন খাঁচা তৈরি করা হয়। তবে এসব খাঁচা ৪-৬টি উপপ্রকোষ্ঠে ভাগ করা থাকে। খাঁচার উপর অংশ কাপড় বা তারের জাল দিয়ে ঢাকা থাকে। এভাবে জলজ প্রাণীর (অক্টোপাস, বাইন মাছ ইত্যাদি) হাত থেকে বাচ্চাগুলোকে রক্ষা করা হয়। খাঁচাগুলোকে পরের বছরের জুন-জুলাই মাস পর্যন্ত সমুদ্রের তলদেশে রেখে জুলাই মাসে উঠিয়ে আনা হয়। এক বছর বয়সের ঝিনুককে আলাদা করে সমুদ্রের ৫ মিটার গভীর অসমান তলদেশে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে স্থাপন করা হয়।
এভাবে সমুদ্রের তলদেশে দুবছর ধরে ওদের পালন করা হয়। তৃতীয় বছরের জুন-আগষ্ট মাসের মধ্যে ডুবুরীরা এসব ঝিনুক সংগ্রহ করে। ঝিনুকগুলোকে পরিষ্কার করে ১০ দিনের জন্য চাষের খাঁচা (culture cage)-য় রাখা হয়। এ দশদিনে ওরা স্থানান্তর জনিত ক্লান্তি শেষে নতুন পরিবেশের নানা প্রতিকূলতায় অভিযোজিত হতে শেখে এবং অগভীর পানিতে বাসের উপযোগী হয়। এরপর ঝিনুকগুলোকে পরীক্ষাগারে এনে নিউক্লিয়াস প্রবেশ করানো হয়।

(গ) নিউক্লিয় উপাদান প্রবেশ করানো

মুক্তা সৃষ্টির জন্য যে বহিরাগত বস্তুকে ঘিরে স্তরে স্তরে ন্যাকার জমা হয় তাকে নিউক্লিয়াস বলে। কৃত্রিম উপায়ে মুক্তা চাষের জন্য একটি জীবন্ত ঝিনুকের ম্যান্টলের ক্ষুদ্র টুকরো নিউক্লিয় উপাদানসহ অন্য ঝিনুকে প্রবেশ করানো হয়।
১। উপযুক্ত ঝিনুক বাছাইঃ সমুদ্র থেকে উঠিয়ে আনা ঝিনুক থেকে প্রথমে সহনশীল ও সুস্থ-সবল ঝিনুকগুলোকে বেছে আলাদা করে নেয়া হয়। বাছাই করা ঝিনুকগুলোকে পর্যায়ক্রমে গরম ও ঠান্ডা পানিতে রাখা হলে ঝিনুক শুক্রাণু ও ডিম্বাণু স্খলন শুরু করে। নিউক্লিয়াস প্রবেশ করানোর জন্য যে অপারেশন করা হয় তার ধাক্কা সামলাতে জননকোষ স্খলন করা এসব ঝিনুকই উপযুক্ত মনে করা হয়। অপারেশনের সময় ঝিনুকের কপাটিকা খোলার জন্য এদের শ্বাসরোধ করা হয়। কপাটিকা দুটি খুলে গেলে উন্মুক্ত কপাটিকা যেন পুনরায় বন্ধ না হয়ে যায় সেজন্য তাড়াতাড়ি একটি বাঁশের টুকরা ঢুকিয়ে দেয়া হয়।
২। গ্রাফট টিস্যুর (Graft tissue) প্রস্তুতিঃ যে কলাখন্ডকে ম্যান্টলের ভেতর প্রবেশ করানো হয় তাকে গ্রাফট টিস্যু বলে। ধারালো চাকু দিয়ে সুস্থ-সবল ঝিনুকের ম্যান্টল-কিনারা থেকে ৭ সে. মি. লম্বা ও ০.৭৫ সে. মি. চওড়া একটি অংশ কেটে নিয়ে তাকে ছোট ছোট বর্গাকারে সমান করে কাটা হয়। টুকরাগুলোকে সমুদ্রের পানিতে ২২° C তাপমাত্রায় রেখে দেয়া হয়। এভাবে টুকরাগুলো ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত জীবিত থাকে। এসব টুকরা বা গ্রাফটের বাইরের কিনারা সম্মন্ধে পরিচিত থাকতে হবে কারণ ন্যাকার নিঃসারী কোষগুলো শুধু বাইরের কিনারায়ই থাকে। তাই বাইরের কিনারাকে নিউক্লিয়াসের ঘনিষ্ট সান্নিধ্যে রাখতে হয়।
৩। নিউক্লিয় উপাদান প্রস্তুতিঃ যে কোনো ক্ষুদ্র কণাই নিউক্লিয়াস হিসেবে কাজ করলেও চুনময় নিউক্লিয়াসই মুক্তা সৃষ্টির জন্য আদর্শ বলে জানা গেছে। অন্য কোনো জীবন্ত মলাস্কের ভারী চুনময় খোলকের ক্ষুদ্রাংশ সবচেয়ে ভালো নিউক্লিয়াস হিসেবে কাজ করে। গোলাকার নিউক্লিয়াস উন্নতমানের গোল মুক্তা সৃষ্টি করে।
৪। নিউক্লিয় উপাদান প্রবেশ করানোঃ নিউক্লিয়াস প্রবেশ করানোর জন্য ঝিনুককে এমনভাবে স্থাপন করা হয় যাতে ডান খোলকটি উপরের দিকে থাকে। ম্যান্টল ভাঁজকে হালকা করে ধীরে ধীরে পা ও মূল দেহপিন্ডকে বের করে পা-এর এপিথেলিয়ামে সামান্য কেটে একটি নালিকা তৈরি করতে হয়। এতে গ্রাফট টিস্যু বসিয়ে তার উপর নিউক্লিয়াস স্থাপন করা হয়।

নিউক্লিয়াস প্রবেশ করানোর পর মিউকাস নিঃসৃত হয়ে পা-এর ক্ষত স্থান শুকিয়ে যায়। এরপর বাঁশের গোঁজটি সরিয়ে নিলে ঝিনুকের খোলকদুটি আপনা আপনি বন্ধ হয়ে যায়। দ্বিতীয় নিউক্লিয়াস প্রবেশ করানোর সময়ও অনুরূপ অপারেশন করা যায় কিন্তু তৃতীয় বার চেষ্টা না চালানোই উচিত। অপারেশনের সময়কাল ৩০ মিনিটের বেশি হওয়া উচিত নয়।
৫। অপারেশনোত্তর যত্নঃ নিউক্লিয়াসধারী ঝিনুকগুলোকে খাঁচায় ভরে ভাসমান ভেলা থেকে সমুদ্রের পানিতে ২-৩ মিটার গভীরতায় ৬-৭ দিন ঝুলিয়ে রাখা হয়, ফলে ওরা অপারেশনজনিত ধকল কাটিয়ে উঠে। এ ৬-৭ দিনকে আরোগ্যকাল (recovery period) বলে। এ সময় ঝিনুকগুলোকে ভালোভাবে পরীক্ষা করে মৃত ঝিনুক খাঁচা থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। কখনও কখনও কিছু ঝিনুক প্রবেশিত নিউক্লিয়াসকে বের করে দেয়। তাতে মুক্তা সৃষ্টি হয় না।
তাই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে X-ray-র মাধ্যমে দেখে নেয়া হয় ঝিনুক দেহে নিউক্লিয়াস আছে কি-না। নিউক্লিয়াসধারী ঝিনুককে খাঁচায় রেখে ২-৩ মিটার গভীর সমুদ্রের পানিতে ভেলা থেকে ৩-৬ বছরের জন্য ভাসিয়ে দেয়া হয়। একটি ভেলা থেকে প্রায় ৬০টি খাঁচা ঝোলানো হয়। প্রত্যেক খাঁচায় ৫০-৬০টি করে মোট ৩০০০-৩৬০০ ঝিনুক থাকে। উষ্ণ অগভীর পানিতে (১৪ মিটারের বেশি গভীর নয়) মুক্তা-ঝিনুকের বৃদ্ধি ভালো হয়। ঝিনুক প্ল্যাংকটন খাবার খেয়ে বড় হয়।

(ঘ) মুক্তা আহরণ

তিন থেকে ছয় বছর পর ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারী মাসের দিকে ঝিনুকগুলোকে খাঁচাসহ তুলে এনে ঝিনুকের ভেতর থেকে মুক্তা আহরণ করা হয়।

(ঙ) মুক্তা পরিষ্কারকরণ

ঝিনুকদেহ থেকে আহরণের পর মুক্তাগুলোকে সাবধানে সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে মুছে বর্ণ ও আকারের ভিত্তিতে বাছাই করে বাজারজাত করা হয়।

ঝিনুকের অর্থনৈতিক গুরুত্ব

ঝিনুক একটি শান্ত স্বভাবের ও ধীর গতির প্রাণী হলেও এবং মানুষের চোখের আড়ালে জলাভূমির তলদেশে বাস করলেও এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব প্রাচীন কাল থেকেই গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হচ্ছে। নিচে ঝিনুকের কয়েকটি অর্থনৈতিক গুরুত্বের উল্লেখ করা হলো।
ইতিবাচক দিক
(১) মানুষের খাদ্য হিসেবেঃ প্রাচীন কাল থেকে পৃথিবীর নানা দেশে ঝিনুকের কোমল দেহকে অন্যতম খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছে।
(২) পানসেবীদের প্রয়োজনেঃ বাংলাদেশসহ যে সব দেশে পানসেবী রয়েছে তাঁদের কাছে পাথুরে চুনের চেয়ে ঝিনুক-চুন বেশী পছন্দ। তাঁরা চুনকে পানের সাথে ব্যবহার করেন।
(৩) ঔষধ হিসেবেঃ অনেকের ধারণা, পাথুরে চুনের চেয়ে ঝিনুক-চুন বেশি প্রাকৃতিক গুণসমৃদ্ধ, সুস্বাদু ও ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ। এ চুন যকৃত ও পাকস্থলীর অসুখ দূর করে। তা ছাড়া ঝিনুক-চুন বাত, শ্লেষ্মা, শূল বেদনা, অম্লপিত্ত, ব্রণ ও বেদনানাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
(৪) বোতাম তৈরিঃ ঝিনুকের খোলক কেটে বোতাম তৈরি একটি লাভজনক ও ব্যাপক বিস্তৃত শিল্প।
(৫) অলংকার ও সৌখিন সামগ্রী তৈরিতেঃ ঝিনুকের খোলক থেকে উজ্জ্বল রংয়ের মনলোভা অলংকার, আসবাব, পুতুল, ছাইদানী, ঝাড়বাতি, চাকুর বাট প্রভৃতি তৈরিতে ঝিনুকের খোলক অনন্য।
(৬) চামচ ও চাকুর বিকল্প হিসেবেঃ ঝিনুকের খোলক বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশে গ্রামাঞ্চলে বা আদিবাসী গোত্রে চামচ ও চাকুর বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
(৭) মুক্তা আহরণেঃ বহুমূল্যবান মুক্তা আহরিত হয় ঝিনুক থেকে।
(৮) বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেঃ ঝিনুক থেকে আহরিত প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম মুক্তা, মুক্তার তৈরি গহনা সামগ্রী, খোলকের তৈরি খেলনা ও অন্যান্য গৃহসামগ্রী রফতানি করে অনেক দেশ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে।
(৯) সড়ক নির্মাণেঃ অনেক দেশে সড়ক মসৃণ করার জন্য ঝিনুকের ভাঙা খোলক কাজে লাগানো হয়।
(১০) হাঁস-মুরগি ও মাছের খাদ্য হিসেবেঃ ঝিনুকের খোলক-চূর্ণ হাঁস-মুরগির ডিমের খোলক গঠনে সহায়ক উপাদান হিসেবে খাদ্যের সাথে মিশিয়ে এবং ভেতরের কোমল দেহকে সরাসরি খাদ্য হিসেবে দেয়া হয়।
(১১) বড়শির টোপ হিসেবেঃ বড় বড় মাছ ধরার জন্য ঝিনুকের কোমল দেহকে বঁড়শিতে টোপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
(১২) জীবিকা নির্বাহেঃ ঝিনুকের খোলক থেকে চুন প্রস্তুতিতে; কোমল দেহাংশ সংগ্রহে, হাঁস-মুরগির খাদ্য তৈরিতে; মুক্তা আহরণ ও চাষে লক্ষ লক্ষ লোক নিয়োজিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছে।
(১৩) প্রাকৃতিক ধাঙর হিসেবেঃ নালা-নর্দমাবাহিত বা জীবের মৃতদেহের পচনীয় জৈব পদার্থকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে ঝিনুক জলাভূমির তলদেশকে রাখে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, ফলে পানি দূষণ রোধ হয়, মাছের উৎপাদন বাড়ে এবং জলজ পরিবেশ থাকে নির্মল।
নেতিবাচক ভূমিকা
রোগ-জীবাণু সংক্রমণেঃ খাদ্য হিসেবে গ্রহণীয় ঝিনুকের মাধ্যমে মানুষ টাইফয়েড, আমাশয় প্রভৃতি রোগের জীবাণু দিয়ে সংক্রমিত হয়ে রোগে আক্রান্ত হয়। মানবসৃষ্ট। বর্জ্যে দূষিত জলাভূমিতে বাসকারী ঝিনুক গ্রহণে এ ধরনের বিপত্তি ঘটতে দেখা যায়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url