Millennium Development Goal এর সফলতা ও ব্যর্থতা-MDG কি

MDG হলো (Millennium Development Goal)। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত রাষ্ট্রগুলোর উন্নতির লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF)-এর গৃহীত সংস্কার কর্মসূচি ব্যর্থ হওয়ার প্রেক্ষিতে এসব দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে ২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ আয়োজিত "সহস্রাব্দ শীর্ষ বৈঠক' অনুষ্ঠিত হয়।
Millennium Development Goal এর সফলতা ও ব্যর্থতা-MDG কি
এতে ২০১৫ সালের মধ্যে ৮টি লক্ষ্য পূরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

সূচিপত্রঃ- Millennium Development Goal-MDG এর সফলতা ও ব্যর্থতা-MDG কি-MDG full meaning

MDG কি

MDG এর elaboration হলো (Millennium Development Goal) "মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস'। যা সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য' নামে পরিচিত। মিলেনিয়াম লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে ২০০২ সালে মেক্সিকোর মন্টেরে শহরে 'উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন' শীর্ষক বৈঠকে ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর আলোচনার প্রেক্ষিতে একটি সর্বসম্মত রাজনৈতিক রূপরেখা প্রণীত হয়।
ধনী দেশগুলো অর্থায়নের ব্যাপারে একমত পোষণ করে থাকে।

MDG এর লক্ষ্য ও লক্ষ্যমাত্রাসমূহ

জাতিসংঘের গৃহীত 'সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য' (MDG- Millennium Development Goal) -এর ৮টি লক্ষ্য আছে। নিচে এসব লক্ষ্যসমূহ উল্লেখ করা হলোঃ
লক্ষ্য-১: চরম দারিদ্র্য এবং ক্ষুধা দূর করা।
লক্ষ্যমাত্রাঃ ১৯৯০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে মোট জনগোষ্ঠীতে ক্ষুধার্ত মানুষের আনুপাতিক অংশ অর্ধেকে হ্রাস করা।
লক্ষ্য-২: সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন।
লক্ষ্যমাত্রাঃ ২০১৫ সালের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষার হার শতকরা ১০০ ভাগে উন্নীত করা।
লক্ষ্য-৩: নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করা।
লক্ষ্যমাত্রাঃ ২০০৫ সালের মধ্যে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে এবং ২০১৫ সালের মধ্যে সকল শিক্ষান্তরে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করা।
লক্ষ্য-৪: শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস।
লক্ষ্যমাত্রাঃ ১৯৯০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার দুই-তৃতীয়াংশ হ্রাস।
লক্ষ্য-৫: মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নতি ।
লক্ষ্যমাত্রাঃ ২০১৫ সালের মধ্যে প্রসবকালীন মৃত্যুর হার তিন-চতুর্থাংশ হ্রাস।
লক্ষ্য-৬: এইডস, ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য রোগের বিস্তার রোধ করা।
(১) ২০১৫ সালের মধ্যে এইডস এর বিস্তার রোধ এবং রোগীর সংখ্যা হ্রাস।
(২) ২০১৫ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া রোগের বিস্তার রোধ এবং রোগীর সংখ্যা হ্রাস।
লক্ষ্য-৭: টেকসই উন্নয়ন নীতিমালা এবং পরিবেশ নিশ্চিত করা।
লক্ষ্যমাত্রাঃ
(১) জাতীয় পর্যায়ে নীতিমালা এবং কার্যক্রমে টেকসই উন্নয়ন নীতিমালা অঙ্গীভূত করা এবং পরিবেশীয় সম্পদের ক্ষয়রোধ।
(২) ২০১৫ সালের মধ্যে সুপেয় পানি প্রাপ্তির সুযোগহীন জনসংখ্যার আনুপাতিক হার অর্ধেকে হ্রাস ।
(৩) ২০২০ সালের মধ্যে ন্যূনতম ১০ কোটি বস্তিবাসীর জীবনমান লক্ষণীয়ভাবে উন্নত করা ।
লক্ষা-৮: উন্নয়নে বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব তৈরি করা।

MDG অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্য

MDG অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্য খুব একটা লক্ষ্য করা যায় না। নিচে MIX অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্য উল্লেখ্য করা হলো-
(১) শিশুমৃত্যু হার হ্রাসে সাফল্যঃ MIXG এর লক্ষ্য- ১৯৯০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার দুই-তৃতীয়াংশ হ্রাস করার কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে ৫ বছরের নিচে শিশুমৃত্যুর হার হ্রাসে বাংলাদেশ সরকার বেশ সাফল্য পেয়েছে। তাছাড়া টিকা দান কর্মসূচি, পুষ্টিমান বাড়ানো, গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসা সেবা পৌঁছানো প্রভৃতি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
(২) মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাফল্যঃ MDG এর লক্ষ্য-৫ এ ২০১৫ সালের মধ্যে প্রসবকালীন মৃত্যুর হার তিন-চতুর্থাংশ হ্রাস করার কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য বাল্যবিবাহ রোধ, প্রশিক্ষিত ধাত্রী দ্বারা প্রসব, প্রসবকালীন জটিলতা সম্বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি প্রভৃতি বিষয়ে সরকারি পদক্ষেপের ফলে এ বিষয়ে বেশ অগ্রগতি হয়েছে।

MDG অর্জনে বাংলাদেশের ব্যর্থতা

MDG অর্জনে বাংলাদেশের সাফল্যের চেয়ে ব্যর্থতাই বেশি।
নিচে MDG অর্জনে বাংলাদেশের ব্যর্থতাসমূহ আলোচনা করা হলো।
(১) চরম দারিদ্র্য এবং ক্ষুধা দূরীকরণের ব্যর্থতাঃ MDG এর লক্ষ্য-১ এ চরম দারিদ্র্য ও ক্ষুদা দূরীকরণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সরকার আশা করে যে ২০১৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ এ লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলোর তথ্য অনুসারে গত ৮ বছরে দেশের দারিদ্র্য দূর হয়েছে ৪.৭ শতাংশ। সেই হিসাবে বছরে দারিদ্র্য কমেছে মাত্র ০.৫৪ শতাংশ হারে। কিন্তু MDG পূরণে প্রতি বছর ১.১৫ শতাংশ হারে দারিদ্র্য দূর করতে হবে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১৩-এর তথ্য অনুসারে খাদ্য গ্রহণের ভিত্তিতে দারিদ্র্যের হার ২০০০ সালের ৪৪.৭ শতাংশ থেকে কমে ২০১২ সালে দাঁড়িয়েছে ৩১.৫ শতাংশে। তাছাড়া প্রতিবছর মঙ্গা, খরা, বন্যার কারণে এ লক্ষ্য অর্জন করা খুব কঠিন হয়ে উঠবে। তাছাড়া ধনী গরিব বৈষম্য চরম পর্যায়ে। ১৯৯১-৯২ সালে যেখানে সর্বাধিক ৫ শতাংশ ধনী পরিবারের জাতীয় আয়ের অংশ ছিল ১৮.৮৫ শতাংশ, ২০১০ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৫২ শতাংশ।
(২) সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনে ব্যর্থঃ MDG এর লক্ষ্য-২ এ সর্বজনীন প্রাথমিক অর্জনের কথা বলা হয়েছে। বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুসারে প্রাথমিক শিক্ষায় অংশগ্রহণের হার ৮৩ শতাংশ। আর প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করার হার ৮০ শতাংশ। আমাদের দেশে শিক্ষা বলতে শুধু সাক্ষরতা ধরে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু ২০১৫ সালের মধ্যে মানসম্মত শিক্ষার কথা বলা হয়েছে, যা অর্জন করা বেশ কঠিন।
(৩) নারী-পুরুষের বৈষম্য দূরীকরণে ব্যর্থতাঃ MDG এর লক্ষ্য-৩ এ নারী-পুরুষের বৈষম্য দূরীকরণের কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে লিঙ্গ-বৈষম্য দূর হয়েছে বলে দাবি করেছে। শিক্ষার ক্ষেত্রে সরকার নারীদের প্রাধান্য দিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক ক্ষেত্রে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে বৈষম্য কিছু কমেছে। কিন্তু বৈষম্য দূর করতে নারীর ক্ষমতায়ন একান্ত জরুরি।
(৪) এইডস, ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য রোগের বিস্তার রোধে ব্যর্থতাঃ MDG এর লক্ষ্য-৬ এ এইডস, ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য রোগের বিস্তার রোধের কথা বলা হয়েছে। সরকারি তথ্য মতে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে শনাক্তকৃত এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কয়েক হাজার। কিন্তু এ সংখ্যা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। বেসরকারি হিসেবে এটা কয়েক লাখ হবে। মাদকসেবী এবং পতিতাদের মাধ্যমে এ রোগ বেশি ছড়াতে পারে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে তেমন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না।
(৫) টেকসই উন্নয়ন নীতিমালা এবং পরিবেশ নিশ্চিতকরণে ব্যর্থতাঃ MDG টেকসই উন্নয়ন নীতিমালা এবং পরিবেশ নিশ্চিতকরণের কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশে আছে মাত্র ১৭.০৮ কিন্তু ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা জরুরি। পানি আর্সেনিকের কারণে খেতে পারছে না। আনিক আকার ধারণ করছে। গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতি কম হওয়া এবং জনসংখ্যার আধিক্যের কারণে মানুষ যেভাবে শহরমুখী হচ্ছে তাতে বস্তিবাসীর জীবনমানের উন্নতি সম্ভব নয়।

বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব তৈরিতে ব্যর্থতা

 MIG অংশীদারিত্ব তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। এরই প্রক্রিয়ায় স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ স্বপ্ন নিয়ে থাকে। কিন্তু ঋণগুলো এমন শর্ত নির্ভার হয় যেখানে উন্নতির চেয়ে অবনতির সম্বাবনাই বেশি। তাছাড়া মুক্ত বাণিজ্যের কারণে আমাদের শিক্ষা খাত ক্ষতিরান্ত হচ্ছে। সুশাসনের অভাবে এবং দুর্নীতির কারণে ৫ বার দুর্নীতিতে প্রথম হয়েছে বাংলাদেশ।

গৃহীত উন্নয়ন কৌশল/ নীতিসমূহের পর্যালোচনা

(১) দারিদ্র্য বিমোচনঃ দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলপত্র ( PRSP-1) সরকারিভাবে ১৬ অক্টোবর ২০০৫ গৃহীত হয়েছে। পরবর্তীতে PRSP-1 (২০০৫-০৮) ও PRSP-II এর মেয়াদ শেষ হলে ষষ্ঠ পঞ্চ- বার্ষিক পরিকল্পনা গৃহীত হয়। এ পরিকল্পনার মাধ্যমে সরকারি সংস্থা এবং এনজিওগুলো দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে কয়েকশ' এনজিও কাজ করছে। এছাড়া বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা দুঃস্থ মহিলাদের ভাষা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু মুদ্রাস্ফীতি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে দারিদ্র্য বিমোচন ধীর গতিতে চলছে।
উত্তরাঞ্চলের জনগণ মঙ্গাকবলিত, দক্ষিণাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলে বন্যা জনগণের ব্যাপক ক্ষতি করে। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগও দারিদ্র্য বিমোচনের অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে। তাছাড়া জনগণকে সুশিক্ষিত করতে না পারলে কখনোই দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব নয়। বিশ্বের দিকে তাকালে দেখা যায় যেসব দেশের শিক্ষার হার বেশি তারা তত বেশি উন্নত। তাই সরকারকে আরো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং তার বাস্তবায়ন করতে হবে।
(২) প্রাথমিক শিক্ষাঃ বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা এবং গরিব শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান জোরদার করতে হবে। শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য শিক্ষকের প্রশিক্ষণ এবং আর্থিক সহায়তা দান করা প্রয়োজন। ২০১৫ সালের মধ্যে মানসম্মত শিক্ষার জন্য স্কুল এবং শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
(৩) নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করা এবং নারীর ক্ষমতায়নঃ ২০১৫ সালের মধ্যে সকল শিক্ষান্তরে নারী- পুরুষের বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে সরকার মেয়েদের বিনাবেতনে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশুনার ব্যবস্থা করেছে। এটা আরো বাড়াতে হবে এবং সামাজিকভাবে নারী-পুরুষের বৈষম্য কমানো না গেলে শিক্ষাক্ষেত্রে তা সম্ভব হবে না। তাছাড়া নারীর ক্ষমতায়ন একান্ত জরুরি। সংসদে নারী আসন, ইউপি নির্বাচন প্রভৃতির মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু এটি পর্যাপ্ত নয়। দেশে যেখানে সরকারি এবং বিরোধী দলীয় প্রধান দুজনেই মহিলা সেখানে অন্যান্য ক্ষেত্রে মেয়েদের অবস্থান অনেক নিচে। ধর্মীয় কুসংস্কার, ফতুয়া, পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা এজন্য দায়ী। তাই শিক্ষিত করা এবং সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারকে এ সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে ।
(৪) শিশু মৃত্যু হ্রাসঃ বেসরকারি ক্ষেত্রে যে পুষ্টি কার্যক্রম রয়েছে তা সরকারিভাবে এবং ব্যাপক হারে চালিয়ে যেতে হবে। এছাড়া টিকাদান কর্মসূচি দক্ষতার সাথে চালিয়ে যেতে হবে। চিকিৎসা সেবা গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে দিতে হবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে যে চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে সেখানে চিকিৎসকের সংখ্যা বৃদ্ধি, ওষুধপত্রের সহজলভ্যতা এবং দুর্নীতি রোধ করা একান্ত প্রয়োজন।
(৫) মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নতিঃ ইউনিয়ন এবং গ্রাম পর্যায়ে প্রসূতিসেবা, মাতৃমঙ্গলকেন্দ্র চালু এবং প্রশিক্ষিত ধাত্রী ও ডাক্তার রাখা দরকার। তাছাড়া বাল্যবিবাহ রোধ, শিক্ষার বিস্তার এবং সচেতনা বৃদ্ধির মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। এসব ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত ব্যবস্থা জোরদার করা না গেলে মাতৃমৃত্যুর হার কমানো সম্ভব নয় ।
(৬) এইডস রোধঃ সরকার এইডস নিয়ে খুব সচেতন নয়। কারণ তাদের পরিসংখ্যান এবং বাস্তবতাতে আকাশ-পাতাল তফাৎ লক্ষ্য করা যায়। মাদকসেবীদের একই সুচে মাদক গ্রহণ ব্যবহৃত ডিসপজেবল সিরিঞ্জ অবৈধভাবে হাসপাতালে ব্যবহার, অনিরাপদ রক্ত সঞ্চালন বন্ধ করা এবং পতিতাদের সচেতনতা বৃদ্ধি ও নিরাপদ স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হবে।

পতিতালয়গুলোতে কনডম ব্যবহারের ওপর জোর দিতে হবে। সরকারিভাবে এসব নিয়ে তেমন কোন কাজ হচ্ছে না। বেসরকারিভাবে এইডস নিয়ে যেসব কাজ চলছে তাতে এ ভয়ঙ্কর ব্যাধি রোধ করা সম্ভব হবে না। তাছাড়া ব্যাপকভাবে গণসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এইডস এবং অন্যান্য রোগ থেকে জনগণকে রক্ষা করা সম্ভব।
(৭) টেকসই উন্নয়ন এবং পরিবেশঃ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পলিথিন নিষিদ্ধকরণ, ইটের ভাটায় গাছ পোড়ানো বন্ধ, চিমনি ১২০ ফুট লম্বা করা ইত্যাদি ভালো পদক্ষেপ সরকার গ্রহণ করেছে। তাছাড়া বনায়ন কর্মসূচীর ফলে জনগণ সচেতন হচ্ছে এবং সরকারি, বেসরকারি এবং ব্যক্তিগতভাবে বৃক্ষরোপণ চলছে। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমাতে না পারলে ভূমি এবং বনভূমির ওপর চাপ বাড়বেই। তাছাড়া জনসংখ্যার আধিক্যের ফলে যে হারে শহরাঞ্চলের জনসংখ্যা বাড়ছে তাতে বস্তিবাসীদের জীবনমান উন্নয়ন সম্ভব হয়। তাই জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমানো এবং গ্রামীণ উন্নয়ন একান্ত তারুরি।
(৮) উন্নয়নে বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব তৈরিঃ বাংলাদেশ যেহেতু স্বল্পোন্নত দেশ তাই দেশের এসব সমস্যাগুলোকে সাহায্যদাতাদের কাছে তুলে ধরতে হবে এবং বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সুবিধা আদায় করতে হবে। এজন্য কূটনৈতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। এছাড়া বিদেশী সহায়তাগুলোর যথাযথ ব্যবহার এবং দুর্নীতিরোধ করতে হবে।

‘সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য মূলত যে জিনিস দরকার তা হচ্ছে সদিচ্ছা, দুর্নীতি রোধ, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গৃহীত নীতিমালার সঠিক প্রয়োগ। বর্তমানে দেশে যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে তা বন্ধ করতে না পারলে এ লক্ষ্য পূরণ কেন কোনো লক্ষ্যই অর্জন করা সম্ভব নয়। তাই দেশে এবং জনগণের উন্নতির স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যেতে অন্যের সাহায্যের আশায় থাকতে হবে না। নিজের পায়ে দাঁড়াবে বাংলাদেশ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Timeline Treasures নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url